রাজশাহীর বাগমারায় এক স্বামী পরিত্যাক্তা নারী ইউপি সদস্যদের হাতে নির্যাতন ও লাঞ্চনার শিকার হয়ে বিষ পানে আত্মহত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নের বাগান্না গ্রামে। ওই ঘটনায় স্বামী পরিত্যাক্তা নারীর ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনের নামে থানায় একটি হত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ইউপি সদস্যের ভাই আব্দুল করিম (৫৫)কে গ্রেপ্তার করে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরির্দশক (এসআই) কামরুজ্জামান জানান। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বড়বিহানালী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদের সাথে স্বামী পরিত্যাক্তা নারী আক্তারুন্নেছার পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দ্ব›দ্ব চলে আসছিল। এ নিয়ে মাস দুয়েক আগে আক্তারুন্নেছা বাদী হয়ে আদালতে ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করে। এতে ইউপি সদস্য ক্ষিপ্ত হয়ে আক্তারুন্নেছাকে শায়েস্তা করার জন্য গত (৩১ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার রাতে ক্ষেতের ফসল নষ্টের অভিযোগে আক্তারুন্নেছাকে তার বাড়ি থেকে ধরে এনে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করেন। খবর পেয়ে রাতেই ইউপি চেয়ারম্যান মাহামুদুর রহমান মিলন গ্রাম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং নির্যাতিত আক্তারুন্নেছাকে উদ্ধার করেন এবং গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেন। গত বুধবার (১ জানুয়ারী) নির্যাতিত নারী বিষ পান করেন। বাড়ির লোকজন বিষ পানের বিষয়টি জানতে পেরে তাকে দ্রæত স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে আক্তারুন্নেছা মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান এবং মৃত আক্তারুন্নেছার লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। ওই ঘটনায় রাতেই নিহতের ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনের নামসহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যার প্ররোচনায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ইউপি সদস্যের ভাই আব্দুল করিমকে গ্রেপ্তার করে। সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন দেব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাগমারা থানার পুলিশকে নির্দেশ দেন। ঘটনারসাথে জড়িত ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ বেঁধে রাখা ও পারিবারিক দ্বন্দ্বের বিষয়টি স্বীকার করলেও নির্যাতনের কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মৃত নারীর লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় পুলিশ আব্দুল করিম নামের এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।