ভাঙ্গুড়ায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরশহরের একটি ক্লিনিকে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে রুপালি খাতুন (৩৫) নামে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়। রুপালি উপজেলার পাটুলীপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের স্ত্রী। পরিবারের অভিযোগ, অদক্ষ এনেস্থিসিয়া ডাক্তার দিয়ে অজ্ঞান করায় ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিহতের পরিবারকে টাকা দিয়ে আপস করার চেষ্টা করছে।

জানা যায়, রুপালি খাতুনকে দুইদিন আগে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করে তার পরিবার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা খানম সিজার করে রুপালির একটি পুত্রসন্তান প্রসব করান। এর আগে ওই ক্লিনিকের আরেক ডাক্তার আখলাকুর আফরোজ আসিফ রুপালিকে অজ্ঞান করে। অজ্ঞান করার কিছুক্ষণ পরেই রুপালির শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। এ নিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সাথে রুপালির পরিবারের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলেও ডাক্তার হালিমা খানম সিজার করে প্রসূতির সন্তান প্রসব করান। নবাগত সন্তান বর্তমানে সুস্থ আছে। এরপর অপারেশন থিয়েটারে ওই প্রসূতি একেবারেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এ সময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ওই প্রসূতিকে ক্লিনিক থেকে বের করে দিয়ে অন্য কোথাও নিয়ে চিকিৎসা করাতে বলেন। তখন পরিবারের লোকজন রুপালিকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতকে নিয়ে পরিবারের লোকজন বাড়ি চলে যায়।

এদিকে নিহতের পরিবার থেকে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে চাইলে ক্লিনিকের মালিক পক্ষ টাকা দিয়ে আপস করতে ওই প্রসূতির পরিবারকে প্রস্তাব দেয়। তবে প্রসূতির পরিবার সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এ বিষয়ে মামলা করবেন কিনা পরিবারের সবাই আলোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

নিহত প্রসূতির মামা নুর ইসলাম বলেন, ‘ক্লিনিকে ভর্তি করার পরেই চিকিৎসা কার্যক্রম আমার কাছে ভুল মনে হয়েছে। এ নিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের বাকবিতণ্ডা হয়। তবে নিরুপায় হয়ে ওখানেই সিজার অপারেশন করাই। এখন মনে হচ্ছে মস্ত বড় ভুল করেছি।’ এসময় তিনি এনেসথেসিয়া ডাক্তার আসিফের ভুল প্রক্রিয়ায় অজ্ঞান করায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে আখলাকুর আফরোজ আসিফ বলেন, হাইপারটেনশনের কারণে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়া সিজার অপারেশন করা ডাক্তার হালিমা খানমকে ফোন করলে তার ব্যক্তিগত সহকারী ফোন রিসিভ করে ব্যস্ততার কথা বলেন।

ক্লিনিকের মালিকের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।