মৎস্য ভান্ডার বলে খ্যাত হাইল হাওর “গোপলা নদীসহ বন্ধ জলাশয় উন্মুক্ত করার দাবীতে মানববন্ধন ও পথসভা করেছে স্থানীয় মীর্জাপুর এলাকাবাসী। হাওর বাঁছাও, নদী বাছাঁও । মরছে নদী, ধুকছে দেশ, নিঃশেষ হচ্ছে পরিবেশ। বিভিন্ন স্লোগানে দলে দলে স্থানীয় মৎস্যজীবিরা জড়ো হতে থাকেন। মীর্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ননী গোপাল রায় এর সভাপতিত্বে ও স্থানীয় মৎস্যজীবি এবং ৩নং ওয়ার্ড় আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ এখলাছ মিয়ার সঞ্চালনায় আয়োজিত মানববন্ধন ও পথসভায় বক্তব্য রাখেন- দেশ সেরা পদক প্রাপ্ত বড়ছড়া পাবসস লিঃ এর সাধারণ সম্পাদক শেখ সবুজ আলম, মোঃ ফয়ছল আহমদ, গৌছ উদ্দিন, রহিম উদ্দিন, শ্রমিকলীগ নেতা উসমান গনি চৌধুরী, যুবলীগ সদস্য জামাল মিয়া, সৈয়দ জাকির হোসেন জাকারিয়া, মৎস্যজীবি জুয়েল মিয়া, সিপাই মিয়া, ফৌজ উদ্দিন ও নিমাই মিয়া প্রমুখ। উলে¬খ- একই দাবীতে গত ১৩ ডিসেম্বর “গোপলা নদীসহ বন্ধ জলাশয় উন্মুক্ত করার দাবীতে গোপলা নদীরপাড়ে মানববন্ধন ও পথসভা করে স্থানীয় মীর্জাপুর ইউনিয়ন মৎস্যজীবিরা। এ সময় শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম এর নির্দেশে মৎস্য অফিসার শহিদুল ইসলাম সিদ্দিকী সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং যতাযত আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাষ প্রদান করেন। কিন্তু পরবর্তীতে যতায়ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। বক্তারা বলেন- প্রশাসনের কতিপয় অসৎ ব্যক্তিদের কারণে আমরা স্থানীয় মৎস্যজীবিরা অনাহারে জীবন চলে। প্রভাবশালীরা মাছ শিকারের জন্য অবৈধ ভাবে বাঁশের কাঠি (পাটি বান), ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরার কারনে বৌলারদারা থেকে বড়ছড়া, চেংড়া বিলসহ আশ-পাশের খাল-বিল, নদী-নালায় অবৈধ ভাবে মাছ নিধন করছে। বাঁধ দিয়ে অবৈধ কারেন্টজাল ব্যবহার, ডিমওয়ালা মা-মাছ নিধন, চাষযোগ্য কৃষিজমি ও পাহাড়ি এলাকায় লেবু, আনারস বাগানে কীটনাশক ব্যবহার, সর্বোপরি হাওরের নাব্যতা হ্রাস ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। প্রভাবশালী লোকজন ও স্থানীয় প্রশাসনের কতিপয় অসৎ কর্তা ব্যক্তিদের কারণে ইতিমধ্যেই দখল হয়ে গেছে বিশাল এই হাওরের অনেক ভূমি। লুঠ করা হচ্ছে মাছ। সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি ছাড়াও গোপলা নদীসহ এই হাওর অঞ্চল অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এর আগেও নদী-নালা, খাল, বিল রক্ষার জন্য স্থানীয়রা বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, মানববন্ধনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোন কাজ হচ্ছে না। প্রভাবশালী নাসির উদ্দিন, মব্বত উল¬্যাহ. দুলা মিয়া, শফিক মিয়া, জুয়েল মিয়া ছাইফুল মিয়াগংরা দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে নদীর উন্মুক্ত জলাধার বন্ধ করে অবৈধ কারেন্ট জাল ব্যাবহার করে বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেট দিয়ে প্রকাশ্য মৎস্য নিধন করে আসছেন। স্থানীয় প্রশাসন একাধিকবার তাদের অবৈধ কারেন্ট জাল পুড়িয়ে দিয়ে ছিল। কিন্তু, আবারও একই কায়দায় মাছ নিধন ছলেছে। হাইল হাওরের মৎস্য ও জলাভূমি সংকটাপন্ন হয়ে পড়ায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। জেলা মৎস্য অফিসার মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন- বিষয়টি আমার একার পক্ষে সমাধান করা জটিল। অবৈধ দখলদার ৪জনের বিরুদ্ধে এর আগেও আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমার অফিসার যখন বলবেন, তখন পাবেন। আপনী একটু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলুন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বেগম নাজিয়া শিরিন বলেন- শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বলব। উলেখ- সর্বশেষ- গোপলা নদী কতিপয় ব্যক্তির মধ্যে উলেখ যোগ্য জসিম উদ্দিন, মোঃ শফিক মিয়া, মোঃ ইয়াছিন মিয়া, আয়মন আলী, মানিক মিয়া, সদাঘর মিয়া, কিতাব আলী, মোঃ শাবান মিয়া, মোঃ হালিম, দুলা মিয়া, মোঃ বুদ্ধি মিয়া, মোঃ আলাল মিয়া, গৌউছ মিয়া, মোঃ আজির উদ্দিন ও মাহমুদ মিয়াগংরা কর্তৃক সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, লক্ষ লক্ষ টাকা আন্তসাত ও তার প্রতিকার প্রসঙ্গে স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে ননী গোপাল রায়, মোঃ ফয়ছল আহমদ ও এখলাছ মিয়া জনস্বার্থে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।