২৫ ডিসেম্বর বুধবার খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন। বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হবে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসব। আর এ উৎসবকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনার কলমাকান্দায় খ্রিস্টান পল্লীতে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন উপাসনালয় ও বসত বাড়িতে আলোকসজ্জা, গোশালা তৈরি, ক্রিসমাস ট্রি সাজানোসহ নানান প্রস্তুুতি শেষে উৎসব উদযাপনে ব্যস্ত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৩টি গির্জায় বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপজেলার ৫৫টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজারেরও অধিক লোকজনের অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে মিশন ও গির্জাগুলো নানা রং-বেরংয়ে সাজানো হয়েছে। আলপনার রঙে বাড়ির আঙিনাও পেয়েছে নতুন রূপ। স্বজনদের সঙ্গে বড়দিনের আনন্দ উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাড়িতে এসেছেন লোকজন। বড়দিনকে ঘিরে বাড়িঘর সাজসজ্জার পাশাপাশি অতিথিদের আপ্যায়ন করতে পিঠাপুলিসহ বিভিন্ন রকমের খাবার তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গৃহিনীরা।
উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামের অচিন্ত চাম্বুগং জানান, বড়দিনের উৎসব পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উপভোগ করতে ঢাকার কর্মস্থল থেকে বাড়িতে এসেছি। তিনি আরও জানান, যিশু খ্রিস্ট বেথেলহামের যে গোশালায় জন্মেছিলেন, তার আদলে প্রত্যেক বাড়িতে গোশালা স্থাপন ও সেটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের মীনা রাংসার সাথে এ নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, বড়দিনের আনন্দ উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের বাড়ীতে আত্মীয়-স্বজনর এসেছেন। আমরা ঘর সাজিয়েছি, ক্রিসমাস ট্রি সাজিয়েছি, গোশালা তৈরি করেছি। অতিথিদের জন্য পিঠাপুলি, পায়েসসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করেছি।
ট্রাইবেল ওয়েলফেয়ারের চেয়ারম্যান ভ‚বন চাম্বুগং বলেন, বড়দিনকে ঘিরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করে থাকে। এসব আয়োজনের মধ্যে রয়েছে নগর কীর্তন, বড়দিনের উপাসনা, কেক কাটা, পিঠা পর্ব, প্রীতিভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আশা করছি প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে বড়দিনের উৎসব পালিত হবে।
উপজেলার বালুচড়া মিশনের ফাদার জোসেফ চিসিম বলেন, পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং অন্তরের অন্ধকার দূর করে আলোর পথ দেখানোর বাণী নিয়ে পৃথিবীতে আর্বিভ‚ত হয়েছিলেন যিশু খ্রিস্ট। তিনি চেয়েছেন, মানুষে মানুষে মিলন আর সারা বিশ্বে যেন শান্তি স্থাপিত হয়। ভালবাসার মধ্য দিয়ে যেন সেই শান্তি স্থাপন করতে পারি সে লক্ষ্যেই এবার বড়দিন উদযাপিত হবে।
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল করিম জানান, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালন নিশ্চিত করতে দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সকল চার্চ ও গির্জায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা নিবিঘœ রাখতে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে রয়েছে।