ধর্ষকের নেতৃত্বে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসীবাহীনি ধর্ষীতাকে হত্যার চেষ্টা মুমর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।

মোবরক বিশ্বাস, পাবনা ঃ পাবনার মালিগাছা ইউনিয়নের তালাকপ্রাপ্ত এক যুবতীকে জোরপুর্বক ধর্ষনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষককে পালিয়ে যাবার সুযোগ এবং ধর্ষীতাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মালিগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফসহ ৮জনের নাম উল্ল্যেখ করে পাবনা সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং-৫০, তাং-২২-১২-২০১৯ ইং। এ ঘটনায় এজাহার ভুক্ত ৩জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফ পলাতক রয়েছে। পাবনা সদর থানার এজাহার সুত্রে জানান যায়, গত ২০ডিসেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের আফুরিয়া গ্রামের মোঃ পাঞ্জাব প্রাং এর ছেলে মোঃ ফিরোজ প্রাং তার সহযোগীরা মালিগাছা ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মোঃ নওশের প্রাং এর মেয়ে রুমি খাতুনের রুমে কৌশলে প্রবেশ করে জোর পুর্বক ধর্ষন করে। রুমীর ডাক চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে ধর্ষক ফিরোজকে আটক করে। এ সময় ধর্ষক ফিরোজের সাথে থাকা অন্যরা পালিয়ে যায়। এদিকে ধর্ষক ফিরোজকে আটকের পর ধর্ষকের বাবাসহ চেয়ারম্যান শরিফের সন্ত্রাসীবাহিনী ধর্ষক ফিরোজকে ছাড়িয়ে নিতে ধর্ষীতার বাড়িতে উপস্থিত হয়। ধর্ষীতার বাবা নওশের প্রাং সন্ত্রাসীবাহিনীর চাপের মুখে স্থানীয় মালিগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফের কাছে ফিরোজকে হস্তান্তর করেন। চেয়ারম্যান ধর্ষক ফিরোজকে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনা জানতে পেরে ধর্ষীতা পরের দিন ২১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৭টায় নিজে ধর্ষকের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বিচার দাবী করে। এ সময় ধর্ষক ফিরোজসহ চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী ধর্ষীতাকে বেধড়ক মারপিট করে। স্থাণীয় একাধিক ব্যাক্তি জানায় ধর্ষীতাকে মারপিট করার পুর্বে সন্ত্রাসীরা তাকে গণধর্ষন করে। পরে সন্ত্রাসীরা ধর্ষীতাকে মৃত ভেবে ধর্ষীতার বাড়ির এলাকার ফাঁকা যায়গায় তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা ধর্ষীতাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। শেষ খবর লেখা পর্যন্ত ধর্ষীতাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশে পরবর্তিতে ডাক্তারী পরিক্ষা করা হবে জানান, ওসি নাসিম আহমেদ। এ ঘটনায় ধর্ষীতার পিতা নওশের আলী প্রাং বাদী হয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফসহ ৮জনের নাম উল্ল্যেখ সহ আরো অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় ৯(১) ২০০০সালের নারী ও শিশু র্নিাযতন দমন আইন সংশোধন ২০০৩ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন অভিযোগ পেয়ে মামলা গ্রহন করে ৩জন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। অন্যদেরকে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, তালাকপ্রাপ্ত ধর্ষীতা তার শিশু সন্তান নিয়ে তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করে পাবনার একটি বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের ডে-নাইট ডিউটি থাকায় বখাটে ধর্ষক ফিরোজ প্রতিনিয়ত ধর্ষীতাকে কর্মস্থলে যাবার পথে কু প্রস্তাব দিত। এতে ধর্ষীতা সম্মত না হওয়ায় ঘটনার দিন ফিরোজ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান শরিফের সন্ত্রাসীবাহীনি ধর্ষীতার রুমে প্রবেশ করে জোরপুর্বক ধর্ষন করে। ধর্ষীতার চিৎকারে তার পরিবার ও স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ধর্ষক ফিরোজকে ধরে ফেলে। ধর্ষক ফিরোজের সাথে থাকা অন্যরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি চেয়ারম্যান অবগত হওয়ার পর থেকেই ধর্ষক ও তার সঙ্গিদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় ধর্ষককে ছেড়ে দেয় এবং ধর্ষীতাকে বিচার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরদিন ধর্ষীতা যখন জানতে পারে ধষর্ককে ছেড়ে দিয়েছে এবং এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়ারম্যান কাজ করে যাচ্ছে তখন ধর্ষীতা ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্ষকের বাড়িতে উপস্থিত হয়। এ খবর পেয়ে ধর্ষক ও চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী ধর্ষীতাকে মেরে ফেলতে তাকে গুরত্বর পিটিয়ে জখম করে মৃত ভেবে ধর্ষীতার বাড়ির পার্শ্বে রাস্তার উপর ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থাণীয়রা চেয়ারম্যানসহ তার সহযোগী সন্ত্রাসীবাহিনী ও ধর্ষক ফিরোজের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন। এদিকে ধর্ষক ফিরোজ ও চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফসহ আসামীদের রক্ষা করতে একটি মহল হাসপাতাল ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন যায়গায় তদবির অব্যাহত রেখেছে।