তারামন বিবি। একজন বীর প্রতীকের নাম। চলে গেল তারামন বিবির ১ম মৃত্যবার্ষিকী। বীর প্রতীক তারামন বিবি ছিলেন আমার পেশেন্ট। তিনি যক্ষা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ১৯৯৫-৯৬ সময়কালে আমি কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলাম। ময়মনসিংহে আমার বাবা -মা থাকতেন। আমি ছুটির দিনগুলোতে ময়মনসিংহ চলে যেতাম। সে সময় ময়মনসিংহ শহরে এডভোকেট ভুবন মোহন দাশগুপ্তের বাসায় প্রতি সন্ধ্যায় কবি -লেখকদের আড্ডা জমতো। সেখানে একদিন প্রফেসর বিমল বাবু আমাকে বললেন, আপনিতো দুর্গম এলাকায় চাকরি করছেন। তারামন বিবি নামে একজন বীর প্রতীক রয়েছেন, কিন্তু তাঁর অবস্থান কেউ জানেনা। দেখুনতো ঐ এলাকায় তাঁর খোঁজ পাওয়া যায় কিনা! আমি রাজিবপুর ফিরে এসে স্থানীয় কলেজের শিক্ষক সবুর ফারুকীর সংগে এ ব্যাপারে কথা বলি। তাঁকে আমি অনুরোধ করি তারামন বিবি নামে কোনো মুক্তিযোদ্ধা এ এলাকায় আছে কিনা, খুঁজে দেখার জন্য। সবুর ফারুকী স্থানীয় প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় খুব শীঘ্রী তারামন বিবিকে খুঁজে বের করেন। আমি বিস্ময়ের সংগে লক্ষ্য করি, তারামন বিবি আমার পূর্ব পরিচিত এবং আমার পেশেন্ট। আমি ইচ্ছে করলে তখনই তারামন বিবির কথা মিডিয়ার নজরে আনতে পারতাম এবং তাঁকে খুঁজে বের করার কৃতিত্ব দাবী করতে পারতাম। কিন্তু আমার এসব চিন্তা মাথাতেই ছিলোনা। আমি শুধু চেয়েছিলাম, কি করে তারামন বিবির দ্রুত সুচিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা যায়। আমি বিমল বাবুকে রাজিবপুর আসার জন্য আমন্ত্রণ জানালাম। তিনি আমার আমন্ত্রণে বকশীগঞ্জ কলেজের শিক্ষক আজহার সাহেব সহ রাজিবপুর এলেন এবং তারামন বিবির ইন্টারভিউ নিলেন। এরপর আমার বিস্মিত হওয়ার পালা! বিমল বাবু দ্রুত জাতীয় পত্র -পত্রিকায় ফিচার লিখে তারামন বিবিকে খুঁজে বের করার একক কৃতিত্ব দাবী করলেন! তিনি আমার নাম পর্যন্ত উল্লেখ করতে কার্পণ্য দেখালেন। খ্যাতির লোভ মানুষকে কত নীচে নামাতে পারে, এটি তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে। তবে প্রফেসর সবুর ফারুকী তাঁর এক গ্রন্থে এ প্রসংগে আমার ভূমিকা এবং প্রকৃত সত্য তুলে ধরেছেন। আমি সে সময় পত্র -পত্রিকায় প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে কলাম লিখেছিলাম। সে সময়কার দৈনিক সংবাদ, বাংলার বাণী, ময়মনসিংহের দৈনিক জাহান সহ বেশ কিছু কাগজে আমার প্রতিবাদ পত্রস্থ হয়েছিলো।ময়মনসিংহ, জামালপুরের অনেকেই এ ব্যাপারে জানেন। খ্যাতিলোভী মানুষটিকে তাঁরা করুণার চোখেই দেখে থাকেন।
আমি তখন যেমন কোনো কৃতিত্ব দাবী করিনি, আজও করছি না। তবে অর্ধ সত্য বা আংশিক সত্য কখনোই ‘সত্য ‘নয়। প্রকৃত সত্য তুলে ধরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বৈকী!
বীর প্রতীক তারামন বিবির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।তারামন বিবি। একজন বীর প্রতীকের নাম। চলে গেলগতকাল ছিলো বীর প্রতীক তারামন বিবির ১ম মৃত্যবার্ষিকী। বীর প্রতীক তারামন বিবি ছিলেন আমার পেশেন্ট। তিনি যক্ষা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ১৯৯৫-৯৬ সময়কালে আমি কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলাম। ময়মনসিংহে আমার বাবা -মা থাকতেন। আমি ছুটির দিনগুলোতে ময়মনসিংহ চলে যেতাম। সে সময় ময়মনসিংহ শহরে এডভোকেট ভুবন মোহন দাশগুপ্তের বাসায় প্রতি সন্ধ্যায় কবি -লেখকদের আড্ডা জমতো। সেখানে একদিন প্রফেসর বিমল বাবু আমাকে বললেন, আপনিতো দুর্গম এলাকায় চাকরি করছেন। তারামন বিবি নামে একজন বীর প্রতীক রয়েছেন, কিন্তু তাঁর অবস্থান কেউ জানেনা। দেখুনতো ঐ এলাকায় তাঁর খোঁজ পাওয়া যায় কিনা! আমি রাজিবপুর ফিরে এসে স্থানীয় কলেজের শিক্ষক সবুর ফারুকীর সংগে এ ব্যাপারে কথা বলি। তাঁকে আমি অনুরোধ করি তারামন বিবি নামে কোনো মুক্তিযোদ্ধা এ এলাকায় আছে কিনা, খুঁজে দেখার জন্য। সবুর ফারুকী স্থানীয় প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় খুব শীঘ্রী তারামন বিবিকে খুঁজে বের করেন। আমি বিস্ময়ের সংগে লক্ষ্য করি, তারামন বিবি আমার পূর্ব পরিচিত এবং আমার পেশেন্ট। আমি ইচ্ছে করলে তখনই তারামন বিবির কথা মিডিয়ার নজরে আনতে পারতাম এবং তাঁকে খুঁজে বের করার কৃতিত্ব দাবী করতে পারতাম। কিন্তু আমার এসব চিন্তা মাথাতেই ছিলোনা। আমি শুধু চেয়েছিলাম, কি করে তারামন বিবির দ্রুত সুচিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা যায়। আমি বিমল বাবুকে রাজিবপুর আসার জন্য আমন্ত্রণ জানালাম। তিনি আমার আমন্ত্রণে বকশীগঞ্জ কলেজের শিক্ষক আজহার সাহেব সহ রাজিবপুর এলেন এবং তারামন বিবির ইন্টারভিউ নিলেন। এরপর আমার বিস্মিত হওয়ার পালা! বিমল বাবু দ্রুত জাতীয় পত্র -পত্রিকায় ফিচার লিখে তারামন বিবিকে খুঁজে বের করার একক কৃতিত্ব দাবী করলেন! তিনি আমার নাম পর্যন্ত উল্লেখ করতে কার্পণ্য দেখালেন। খ্যাতির লোভ মানুষকে কত নীচে নামাতে পারে, এটি তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে। তবে প্রফেসর সবুর ফারুকী তাঁর এক গ্রন্থে এ প্রসংগে আমার ভূমিকা এবং প্রকৃত সত্য তুলে ধরেছেন। আমি সে সময় পত্র -পত্রিকায় প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে কলাম লিখেছিলাম। সে সময়কার দৈনিক সংবাদ, বাংলার বাণী, ময়মনসিংহের দৈনিক জাহান সহ বেশ কিছু কাগজে আমার প্রতিবাদ পত্রস্থ হয়েছিলো।ময়মনসিংহ, জামালপুরের অনেকেই এ ব্যাপারে জানেন। খ্যাতিলোভী মানুষটিকে তাঁরা করুণার চোখেই দেখে থাকেন।
আমি তখন যেমন কোনো কৃতিত্ব দাবী করিনি, আজও করছি না। তবে অর্ধ সত্য বা আংশিক সত্য কখনোই ‘সত্য ‘নয়। প্রকৃত সত্য তুলে ধরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বৈকী!
বীর প্রতীক তারামন বিবির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।