নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের বাণিজ্যিক শহর চাঁচকৈড় বাজার থেকে শুরু করে গ্রামের ভেতর ছোট ছোট মুদি দোকানে দিন দিন বেড়েই চলেছে পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম উপাদান নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার। কোনোভাবেই এর লাগাম টানা যাচ্ছে না। পচেনা অথচ ক্ষতিকারক পলিথিনের ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও জীব বৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। প্রশাসনের সামনেই চলছে এসব পলিথিন বিক্রি।
বিভিন্ন শপিংমল, কাঁচাবাজার, মাছ-মাংসসহ যেকোন দোকানে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করলেই দেওয়া হচ্ছে পলিথিন। ব্যবহারের পর যত্রতত্র ফেলে দেওয়া হয় এসব পলিথিন। এর ফলে মাটি হারাচ্ছে উর্বরতা। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা। দূষিত হচ্ছে বিশুদ্ধ বায়ু প্রবাহ এবং সেই সাথে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ক্ষতিকারক রোগবালাই। স্বল্প পুজিতে বেশি মুনাফা লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী জড়িয়ে পড়েছে পলিথিন বাণিজ্যে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৮২ সালের দিকে পলিথিনের ব্যবহার শুরু হয়। সহজে বহনযোগ্য ও স্বল্পমূল্যের কারণে পলিথিন ব্যবহার দ্রæত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু ক্রমান্বয়ে পরিবেশের ওপর মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে এই বিষাক্ত পলিথিন। বিশেষ করে কৃষি জমি, খাল-বিল, নদী-নালা ও পুকুরে ফেলে রাখা পলিথিন জমা হওয়ার ফলে এসব স্থানে পানির স্বাভাবিক প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হয়। যার কারণে মশা-মাছির প্রজনন বৃদ্ধিসহ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, আমদানী, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় প্রদর্শন, বিতরণ, মজুদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর। তারপরও থেমে নেই অতিমাত্রায় পলিথিন উৎপাদন ও বিক্রির প্রতিযোগিতা।
স্থানীয়রা জানান, ১ কেজি পলিথিন ব্যাগের দাম ১৮০ টাকা। থাকে ২৫০টি ব্যাগ। অথচ নেটের ব্যাগের দাম তার থেকে দুই-তিনগুন বেশি। শিগগিরই পলিথিন ব্যবহার রোধে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন।