সিম্পল জীবন। নেই ফ্যাশনের ছোঁয়া। নেই নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা। চলনে বলনে নেই আধুনিকতার রেশ। যা বিশ্বাস করেন তাই বলে ফেলেন। কুঁড়ে ঘরেও যেমন, রাজপ্রসাদেও তেমন। ক্ষমতা তাঁর কাছে ভোগের নয়, বিলিয়ে দেয়ার।নির্লোভ, সততা ও সাদাসিদে জীবনযাপনের জন্য তার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি।যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অর্থ আর স্বার্থের পেছনে ছোটেননি জনপ্রিয় এই নারী রাজনীতিবিদ। প্রসাধনের আবরণে নয়, সততা, কর্তব্য-নিষ্ঠা, নীতি আর আদর্শের সৌন্দর্যে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়েছেন সাধারণ জনতার মাঝে। শত লোভের হাতছানিতে বদলাননি কখনও। আসলে ক্ষমতাও তাকে বদলাতে পারেনি।দলীয় রাজনীতি করলেও তার উদার চিন্তাচেতনা ও সংবেদনশীল মনোভাবের কারণে দল-মত নির্বিশেষে সব মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা অসামান্য। রত্না আহমেদ এমপির জীবন কর্মময়, ধ্যানধারণা অত্যন্ত সুন্দর, ব্যক্তিগত চরিত্রে ছিল সচ্ছল ও সততা সৌরভে উজ্জ্বল। বলছিলাম আমার পরম শ্রদ্ধেয় একজন মা এবং নাটোরের পরিচ্ছন্ন মনের রাজনীতিবিদদের অন্যতম নেত্রী রত্না আহম্মেদ এর কথা । ছোটবেলা থেকে এই মানুষটির আমি স্নেহধন্য । আমাকে নিজের ছেলের মতো স্নেহ করেন ।। যিনি রাজনীতির পাশাপাশি দুস্থ নারীদের জন্যও কাজ করছেন ।। ১৯৫৭ সালে ৭ই আগস্ট নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার ব্রক্ষপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন রত্না আহমেদ এমপি। রত্না আহমেদ ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বোর্ডে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাশ করেন। তারপর ১৯৭৬ সালে এইচএসসি পাশ এবং ২০১৪ সালে বি.এস.এস পাশ করে পড়া শেষ করেন। ছাত্র থাকাবস্থায় তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে পথচলা শুরু করেন ।১৯৯১ সালে বাবু শংকর চৌধুরী’র হাত ধরে রাজনীতির জীবন শুরু । তারও অনেক আগে ১৯৭০ সালের এলাকার রেজা, সেন্টুসহ অনেকের অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগ দেন তিনি । তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে মূলধারা রাজনীতিতে আসেন । সব সময় অসহায় গরীব মানুষের জন্য কাজ করেন । তাঁর স্বামী নেই, দু-সন্তান দেশের বাহিরে থাকেন। তাদের কোন চাওয়া-পাওয়া নেই।স্বামী: বীর-মুক্তিযোদ্ধা মৃত আহমেদ হোসেন চম্পা ২০০৫সালের ১৭ই মে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মৃত্যুবরণ করেন। রত্না আহমেদ’র এক মেয়ে এক ছেলে। বর্তমানে দুই সন্তানই যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা শেষ করে চাকুরী করছেন। প্রথম কন্যা সুমনা আহমেদ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নেভাডা হতে গ্রাজুয়েশান শেষ করে মার্কেটিং গ্রুপে কর্মরত রয়েছেন। দ্বিতীয় পুত্র রাকিব আহমেদ ইউনিভার্সিটি অব নেভাডা হতে গ্রাজুয়েশান শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে তথ্য ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত রয়েছেন। রত্না আহমেদ ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারন করে নাটোর নবাব সিরাজ-উদ্- দৌলা সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সঙ্গে সক্রিয় হন। তারপর বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসায় এগিয়ে যেতে থাকেন। ১৯৯৬সালে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের নাটোর সদর থানার সভানেত্রী নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে নাটোর জেলা শাখার যুগ্ম-আহবায়ক হন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের নাটোর জেলা শাখার আহবায়ক হন। এবং ২০১৫ সালের ৭ই জানুয়ারী সৎ ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ তাঁকে নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে থানা, জেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন কালে মেধা, শ্রম, সততা স্বচ্ছতার মাধ্যমে ইউনিট গুলোকে গতিশীল ও কার্যকর হিসেবে গড়ে তুলেন। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর মহিলা বিষয়ক ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহায়তায় ১২০টি সমবায় কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠা করেন যা গ্রামীণ মহিলাদের ভাগ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এছাড়া তিনি নাটোর জেলার বিভিন্ন সংগঠন, কলেজ, স্কুল, মহিলা পরিষদের সভাপতি, প্রতিষ্ঠাতা, উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রত্না আহমেদ ২০০৯ সালে নাটোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস-চেয়ারম্যান পদে অংশ গ্রহন করেন এবং বিপুল ভোটে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যানে নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘ দিন সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯সালে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য নাটোর-নঁওগা জেলার এমপি হিসাবে মনোনীত করেন। এবং এর পর থেকে এলাকায় বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রসা, গোরস্থান, মন্দির, নলকূপ, আর্থিক অনুদান সহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের সাথে সব সময় থাকছেন।