সিলেটের বিশ্বনাথে মানবপাচার মামলার বাদি রেজাউল ইসলাম রাজুকে আসামিকৃত অস্ত্র মামলায় জড়ানোর চেষ্ঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন অভিযোগে থানা পুলিশ তিনজনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন-উপজেলার কাঠলিপাড়া গ্রামের মৃত চমক আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৫৫), একই উপজেলার রাজননগর গ্রামের মৃত আত্তর আলীর ছেলে আবদুল কাদির (৪০), বিশ্বনাথ নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা আসু মিয়ার ছেলে আবুল কালাম (৩০)। ( ২৭ নভেম্বর) বুধবার রাতে উপজেলার রামপাশা বাজার থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। এঘটনায় উপজেলার নওধার মাঝপাড়া গ্রামের ইলিয়াস আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম রাজু বাদি হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আটককৃত তিনজন ও আরও দুইজনের নাম উল্লেখ রেখে ৪/৫জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন-উপজেলার রামপাশা কোনাপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মানিকের ছেলে আলী হায়দার মহুরী (৩৮), দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী চেরাগী গ্রামের সৈয়দ আলীর ছেলে শাহিন আহমদ (৩০)। (২৮ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার বিকেলে আটককৃতদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ আদালতে প্রেরণ করে।মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, বাদি গত ১৬ মে মামলার আসামি রফিকুল ইসলামসহ ৫জনকে অভিযুক্ত করে আরও ১০/১১জনকে অজ্ঞাতনামা রেখে মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৮। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তধীন রয়েছে। এ মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামসহ অপর আসামিরা বাদি ও তাঁর পরিবারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে আসছে। গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় বাদি নিজ বাড়িতে ছিলেন। এসময় মামলার সাক্ষী দিলোয়ার হোসেন মোবাইল ফোনে বাদিকে জানায়, মামলার অভিযুক্ত আলী হায়দার মহুরী ও রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে মামলার অপর আসামি আবদুল কাদির, আবুল কালাম যোগাযোগ করে বাদি ও সাক্ষী দিলোয়ার হোসেনকে একটি মিথ্যা অস্ত্র মামলায় জড়ানোর জন্য গত এক সপ্তাহ পূর্বে দুই লাখ টাকায় চুক্তি করে। সেই মোতাবেক অভিযুক্ত রফিকুল, আলী হায়দার, শাহিন আহমদ অপর অভিযুক্ত কাদির এবং আবুল কালামকে অগ্রিম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রদান করে। কিন্তু টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে ভাগভাটোয়ারা নিয়ে সম্যাসায় হওয়ায় অভিযুক্ত কাদির, আবুল কালাম অপর অভিযুক্ত আলী হায়দার মহুরীর কাজে টাকা ফেরত চায়। গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় রামপাশা বাজারের সবুজ মিয়ার চায়ের দোকানে অভিযুক্ত কাদির, আবুল কালাম অপর অভিযুক্ত আলী হায়দার মহুরীকে ডেকে এনে বাদিকে অস্ত্র মামলায় জড়ানোর কাজ সম্পন্ন করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এসময় তাদের মধ্যে কথাকাটাটি সৃষ্টি হলে সাক্ষীসহ স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে বাদিকে বিষয়টি অবহিত করলে বাদি তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এসময় স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে মামলার অভিযুক্ত আলী হায়দার মহুরী কাছ থেকে বিস্তারিত বাদি জানেন। পরবর্তিত্বে থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে এসে তাদের আটক করে। এসময় তারা পুলিশের কাছে বাদিকে অস্ত্র মামলায় জড়ানোর কথা স্বীকার করে বলে বাদি এজাহারে উল্লেখ করেছেন।তিনজন আটক ও মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানা ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তি বলেন, আটকককৃতদের আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।