যশোরের শার্শার উলাশীতে পরকীয়ার কারণে স্ত্রীর দেওয়া বিষ
মিশ্রিত ঔষুধ খেয়ে মর্মান্তিক ভাবে নিহত হলো সদ্য বিদেশ ফেরৎ স্বামী শামছুর
রহমান (৪০)।
নিহত শামছুর রহমান শার্শা উপজেলার উলাশী গ্রামের মৃত আরশাদ আলীর ছেলে।
এলাকাবাসি
ও নিহতের স্বজনরা জানায়, শামছুর রহমান ১০/১২ বছর আগে সংসারের সুখ-শান্তির
জন্য মালয়েশিয়া পাড়ি জমায় ৷ মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় স্ত্রী পারুল খাতুন
(৩৫), ১ছেলে তন্ময় (১৭) ও ১ মেয়ে তন্বী (১২)কে রেখে যায়।
এরপর
তার বাড়িতে যাওয়া-আসা করত ঝিকরগাছা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের মৃত গোলাম
সরদারের ছেলে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রুবেল (৩৫)। শামছুর রহমানের
স্ত্রী পারুলের সাথে রুবেলের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে তাদের
মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। একে অপরকে আপন করে পাওয়ার জন্য তারা দু’জন
মরিয়া হয়ে উঠে।
এদিকে,
একদিন তাদের দুজনকে ঘনিষ্ঠ ভাবে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা রুবেলকে হাতেনাতে ধরে
রশি দিয়ে খুটির সাথে বেধে রেখেছিল বলে প্রতিবেশীরা অভিযোগ করেন।
মালয়েশিয়ায়
অবৈধভাবে বসবাস করার অপরাধে শামছুর রহমান সেখানে জেল খাটার পর রুগ্ন শরীর
নিয়ে সপ্তাহ ২ আগে বাড়ি আসে। শামছুর রহমান বাড়িতে স্থানীয় হাতুড়ে চিকিৎসকের
কাছে চিকিৎসার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। গত শনিবার স্ত্রী পারুল স্বামীকে
বলবর্ধক সিরাপ পানের পরামর্শ দিলে স্বামী শামছুর রহমান খুশী মনে সিরাপ পানে
রাজি হয়ে যায়। স্ত্রী পারুল বাড়ির পাশে উলাশী বাজারের ঔষুধের দোকান থেকে
সিরাপ ও ট্যাবলেট আনিয়ে সিরাপের সাথে ঘাস নির্মূলের বিষাক্ত ঔষুধ মিশিয়ে
স্বামী শামছুর রহমানকে খাওয়ানোর সাথে সাথে স্বামীর পেটের ভিতর অসহ্য
যন্ত্রনা শুরু হলে বোতলের অবশিষ্ট সিরাপ স্বামী বোতলসহ বাড়ির উঠানের ফুল
গাছের উপর ছুড়ে ফেলে দেয়। এরপর শামছুর রহমানকে গুরতর অসুস্থ অবস্থায় তার
স্বজনরা যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার শারিরীক অবস্থার
অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড
করেন। । সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে সবাইকে কাদিয়ে
বুধবার রাত ৩টার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন শামছুর রহমান।
অপরদিকে বোতলের অবশিষ্ট সিরাপ স্বামী শামছুর রহমান বোতলসহ বাড়ির উঠানের যে ফুল গাছের উপর ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল সেই ফুল গাছ পুড়ে গেছে।
বুধবার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে নিহতের দাফন সম্পন্ন হয়। #