আলীকদমে শিক্ষার্থী ধার করে পিএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ

বান্দরবানের আলীকদমে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী না থাকায় অন্য বিদ্যালয় থেকে ছাত্র-ছাত্রী ধার করে পরীক্ষা নিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ১৮ নভেম্বর শুরু হওয়া পিএসসি পরীক্ষায় এমন অনিয়ম সংগঠিত হয়েছে। পরীক্ষার প্রথম দিনে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানালেও পরীক্ষার শেষ দিন পর্যন্ত তার কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত ২০০৯ সালে ইউএনডিপি’র অর্থায়নে এবং জেলা পরিষদের তত্ত¡াবধানে আলীকদম উপজেলার শিক্ষা সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মিত হয়। পরবর্তীতে ইউএনডিপি’র সুপারিশে সরকারের বিশেষ আন্তরিকতায় বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণ করা হয়। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। এক শ্রেণীর বিশেষ সুবিধাভূগিরা অসাধু পন্থায় ও আত্মিয়করণের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত নয় এমন অনেকেরই নামের তালিকা মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করেছেন। বিগত ২০১৭ সালে এই তালিকা চুড়ান্ত যাচাই বাছাইয়ের পর চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে আবারো এক দফা এসব তালিকা যাচাই বাছাই করা হয়। কিন্তু যাচাই বছাই প্রত্রিয়ায় স্থানীয় সাংবাদিকদেরকে ধোঁয়াশায় রেখে পূনরায় একটি ক্রুটিপূর্ণ তালিকা মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। এসব শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয় পরিচালনা না করায় বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীও নেই বললেই চলে। কিন্তু বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব তথা শিক্ষকদের চাকুরী বাঁচিয়ে রাখার জন্য উপজেলা সদরের বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে জনপ্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ছাত্র-ছাত্রী ক্রয় করে এনে পরিক্ষা নিয়েছে বিদ্যালয়গুলো।
বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এপ্রতিনিধি আলীকদম বাস টার্মিনাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে গিয়ে ২০১৯ সালে পিএসসি পরীক্ষার্থীদের উপবৃত্তির তালিকা দেখতে চাইলে প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হক তালিকা দেখাতে অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে তিনি তথ্য অধিকার আইন অস্বীকার করে বলেন, আমি আপনাদেরকে কোন তথ্য দিতে বাধ্য নই। তাছাড়া কোন তথ্য অধিকার ফরমও আমি রিসিভ করবোনা।
অনুসন্ধানে জানা যায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আলীকদম বাস টার্মিনাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে উপবৃত্তির টাকা গ্রহণ করলেও মূলতঃ ওই সব শিক্ষার্থী রাইতুমনি পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (সদ্য জাতীয়করণকৃত), মেনক্য মেনকক পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (সদ্য জাতীয়করণকৃত), রেংপুং হেডম্যান পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (সদ্য জাতীয়করণকৃত), বিদ্যামনি পাড়া পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (সদ্য জাতীয়করণকৃত) বিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসকান্দর নুরী বলেন, বিষয়টি সত্যি দুঃখ্য জনক। আমরা এবিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সায়েদ ইকবাল জানান, আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।