আলীকদমে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব, একই পরিবারের ১১ জনসহ ৪৪ জন সনাক্ত, জনমনে আতঙ্ক

হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আলীকদমে ভয়াবহ রুপ নিয়েছে ডেঙ্গু। প্রথমদিকে এই অঞ্চলে ডেঙ্গুর উপস্থিতি বুঝা না গেলেও গত দুই মাসে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু নামক এই মরণ ব্যধি। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, গত দুই মাসে উপজেলা সদরের খুইল্যা মিয়াপাড়া ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৬ জন। বাজার পাড়া ০৪ জন, নয়াপাড়া ০৩ জন, মংহ্লা পাড়া ০১ জন, পূনর্বাসন ০১ জন, রোয়াম্ভু ০১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সব মিলিয়ে ৪৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেসরকারীভাবে (সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে) নির্ধারণ করা গেছে। এ সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে বলেও জানাচ্ছে স্থানীয়রা। এ নিয়ে এলাবাসীর মধ্যে আতংক পরীলক্ষিত হয়েছে। আক্রাদের আলীকদম উপজেলা সরকারি হাসপাতাল ও আলীকদম বাজারস্থ প্যাথলজিতে পরীক্ষার মধ্যমে রোগ নির্ণয় পরবর্তী চিকিৎসার জন্য চলে যাচ্ছে চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য হাসপাতালে। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া না গেলেও নয়াপাড়া এলাকার মোঃ শফি (সিএমসিএইচ), মোঃ সাজ্জাদুর রহমান (ম্যাক্স হাসপাতাল) এবং মোঃ এনাম (ম্যাক্স হাসপাতাল) চট্টগ্রামে আশঙ্কাজন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
খুইল্যা মিয়া পাড়ার সর্দার ফরিদুল আলম জানান, শুক্রবার তারা নিজ উদ্যোগে পাড়ায় আক্রান্ত ২৬ জন ডেঙ্গু রোগীর নামের তালিকা করেছেন এবং তা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। তালিকায় ওই পাড়ার একই পরিবারের ১১জন ডেঙ্গু রোগীর নাম পাওয়া গেছে। মংবাঅং কারবারী পাড়া (বাজার মার্মা পাড়ার) কারবারী থোয়াইসুই মং মার্মা জানান পাড়ার লোকজনদের মধ্যে ডেঙ্গু আতংক দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কয়েকজন আক্রান্ত হলেও চিকিৎসায় তারা ভাল হয়েছে বলে জানান এবং পাড়ার সবাইকে পরিস্কার পরিপরিচন্নতার বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাঃ শহিদুর রহমানের নিকট কতজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে এর কোন সরকারি হিসেব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, এর বেশী কিছু মোবাইল ফোনে তথ্য প্রদান সম্ভব নয় এবং সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করে পত্রিকায় রিপোর্ট লিখার পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মোঃ সায়েদ ইকবাল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি ২২নভেম্বর (শুক্রবার) উপজেলার সবচেয়ে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব এলাকা খুল্যামিয়া পাড়া ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সচেতনতার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করার কথা জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, আমরা ঔষধ সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমরা খুব শীগ্রই আমরা ঔষধ স্প্রে করবো। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঔষদের পর্যাপ্ততার উপর ভিত্তি করে আশঙ্কাজনক অন্যান্য এলাকয়ও স্প্রে করার পরিকল্পনা আছে।