নি¤œমানের মালামাল ব্যবহার করার অভিযোগে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার হুসোরখালী থেকে ইসলামপুর হুদাপাড়া পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন কাজ কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে ঠিকাদারের অনিয়মের কারনে ৬০ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মান করা প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা পাঁকা করার কাজ ব্যহত হচ্ছে। এতে স্থানিয় জনসাধারনের চলাচলে মারাত্বক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
স্থানিয়রা বলছেন, তাদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকারের এলজিইডি কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি পাঁকা করার উদ্যোগ নিলেও ঠিকাদারের কারনে তা যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হবার আশংকা দেখা দিয়েছে। তারা দরপত্র অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করা অথবা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর শহর থেকে দত্তনগর হয়ে জিন্নানগর বাজারের দিকে একটি সড়ক রয়েছে। এই সড়কের হুসোরখালী পাঁকা রাস্তা থেকে ইসলামপুর হুদাপাড়া অভিমূখে একটি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। যে রাস্তাটি দিয়ে পাশ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষ চলাচল করে। গ্রামীন ছোট ছোট যানবাহনও চলাচল করে থাকে। হুসোরখালী গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, তারা বেশ কিছুদিন থেকেই রাস্তাটি পাঁকা করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়ে আসছিলেন। স্থানিয় জনপ্রতিনিধিদের কাছেও ছুটেছেন। সর্বশেষ এলজিইডি কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি পাঁকা করার উদ্যোগ নেন। বরাদ্ধ দেওয়া হয় ৬০ লাখ ৭৭ হাজার ৯১১ টাকা। এরপর এলজিইডি কর্তৃপক্ষ দরপত্র বিক্রি করেন। কাজটি পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সস জাকাউল্লাহ এন্ড ব্রাদার্স।
এলজিইডি মহেশপুর শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, এই কাজে বেড তৈরীর পর ১০ ইঞ্চি বালি, ৬ ইঞ্চি খোয়া মিশ্রিত বালি, ৬ ইঞ্চি খোয়া ও ২৫ মিলি কার্পেটিং করার কথা। কিন্তু ঠিকাদার প্রথমেই নি¤œমানের বালি দিয়েছেন। মাটি মিশ্রিত এই বালি ব্যবহার না করার জন্য বলা হলেও তিনি কথা শোনেননি। এরপর খোয়ার সঙ্গে বালি মিশ্রিত করতে গিয়ে নামমাত্র খোয়া দিয়েছেন। বেশির ভাগ বালির ব্যবহার করেছেন। সেটাতেও কর্তৃপক্ষ আপতি দিলেও ঠিকাদার শোনেননি। ৬ ইঞ্চি খোয়া বিছিয়ে রোলার করার সময় নি¤œমানের খোয়া ব্যবহার করেছেন। এইসব কারনে সংশ্লিষ্ট অফিসের পক্ষ থেকে কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানিয়রা জানান, তারা যখনই দেখেছেন কাজের মান খারাপ হচ্ছে তখনই কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। এই কাজে নি¤œমানের বালি আর ইটের ব্যবহার দৃশ্যমান ছিল। এলাকার মানুষ প্রতিবাদ করেছেন, কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো কথা না শুনে কাজটি করে গেছেন। ফলে কাজটি খুবই নি¤œমানের হয়েছে। বর্তমানে কাজটি বন্ধ থাকলেও ঠিকাদারের লোকজন জোর করেই অনেকটা কাজ সম্পন্ন করেছেন। এগুলোও যাচাই হওয়া জরুরী বলে গ্রামবাসি জানান।
এ বিষয়ে এলজিইডি মহেশপুর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সেলিম হোসেন জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে খুবই সমস্যায় আছেন। ঠিকাদারকে কাজের মান বাড়ানোর জন্য বলা হলেও বিষয়টির তিনি গুরুত্ব দিতে চাননি। এরপর তারা বাধ্য হয়ে কাজটি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন। সেটাও যখন করেছেন ততক্ষনে অনেকটা কাজ শেষ করেছেন। তবে বর্তমানে কাজটি বন্ধ আছে বলে জানান। তিনি বলেন, কাজের মান ভালো করতেই হবে, অন্যথায় তারা আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার জাকাউল্লাহ এন্ড ব্রাদার্সের মালিক মোঃ জাকাউল্লাহ জানান, নি¤œমানের মালামাল ব্যবহার কথাটি সঠিক নয়। তবে অফিসের পক্ষ থেকে খোয়া নিয়ে আপত্তি করা হয়েছে। খোয়ার সাইজ বড় হওয়ায় তারা কাজ বন্ধ করতে বলেছেন। এরপর তারা খোয়া ছোট করে আবার কাজ শুরু করেছেন।