দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় ব্রি-৩৪ সুগন্ধি জাতের ধানের চাষ কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বছর উপজেলার ১০ হাজার ৩৮ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ব্রি-৩৪ ধানের চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আউলিয়া পুকুর, পুনট্রি, ভিয়াইল, ফতেজংপুর, সাতনালা, আবদুলপুরসহ ১২টি ইউনিয়নে কৃষকেরা ১০ হাজার ৩৮ হেক্টর জমিতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ব্রি-ধান ৩৪ জাতের সুগন্ধি ধানের চাষ করেছেন। যা রোপা আমন মৌসুমের মোট ধান চাষের ৪৩ ভাগ ব্রি-ধান ৩৪ চাষ করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, যত দূর দৃষ্টি যায়, মাঠে মাঠে শুধু সোনালি ধান। পাকা ধানের সুগন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। জমির পাশ দিয়ে হেঁটে যেতেই নাকে আসছে সুগন্ধি ঘ্রাণ।
উপজেলার আউলিয়াপুকুর ইউনিয়নের কৃষক মো. রমজান আলী ও ভিয়াইল ইউনিয়নের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এ বছর এলাকার কৃষকেরা শতকরা ৮০ ভাগ জমিতে ব্রি-৩৪ জাতের ধান চাষ করেছেন। এক সময় অবস্থাপন্ন কৃষকেরা বছরজুড়ে পোলাও ও পায়েস খাওয়ার জন্য সামান্য জমিতে সুগন্ধি ধানের চাষ করতেন। সেই সময় কাটারী, কালনী, নেনিয়াসহ বিভিন্ন জাতের সুগন্ধি ধানের প্রচলন ছিল। কিন্তু ফলন ছিল খুবই কম। এ কারণে প্রান্তিক বা মাঝারি কৃষকেরা ওই সব ধান চাষে আগ্রহ ছিল না। কিন্তু ব্রি-৩৪ জাতের ধান কেবল সুগন্ধিই নয়, এই ধানের দাম বাজারে সবচেয়ে বেশি। ফলনও ভালো। ফলে কৃষকেরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতেই এই ধানের চাষ করছেন। তাছাড়া রোগ বলাই না হওয়াও একটি প্রধান কারণ বলে জানান তারা ।
এ বিষয়ে উপজেলা চাল কলের মালিকরা বলছে, দেশে ও বিদেশে ভোক্তাদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় সুগন্ধি চাল ‘রাঁধুনী পাগল’। এই চাল আসলে ব্রি-ধান ৩৪-এরই চাল। এই চাল দেশে যেমন চাহিদা, তেমনি বিদেশও প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি হচ্ছে। বাজারে এ ধানের চাহিদা ও দাম দুটোই বেশি।
উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদ মো: মাহমুদুল হাসান বলেন, উপজেলায় সুগন্ধি ধান চাষের ঐতিহ্য রয়েছে। এ জাতীয় ধানের আবাদ পরিবেশ সম্মত এবং অপেক্ষাকৃত কম উর্বর জমিতে ফলে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এই ধান চাষে কৃষকের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে