কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সবই ছিলো। ছিলো না শুধু সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের বসার জায়গা। বিশেষ করে নারীদের। ছিলো না কোন হেল্প ডেস্ক। ছিলো না নারীদের সেবা দেয়ার জন্য কোন নারী উদ্যোক্তা। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে অনেক ভিড়ে দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে হতো অফিসের বাহিরে। এসময় সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনার শিকার হতো দুগ্ধপোষ্য শিশু নিয়ে আসা মা সহ গ্রামের হতদরিদ্র অসহায় নারীরা।
সম্প্রতি সুবিধা বঞ্চিত অসহায় এসব নারীদের জন্য নাটোর জেলায় এই প্রথম গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেনের উদ্যোগে চালু করা হয়েছে ‘নারী সহায়তা কেন্দ্র’। ইতিমধ্যে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় বাস্তবায়িত এই সহায়তা কেন্দ্রে পৌরসদরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষ ও নারীরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আসতে শুরু করেছেন।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, এই কেন্দ্র থেকে এখন থেকে বিনামুল্যে আবেদন করা হবে। নারী সহায়তা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে একজন নারী উদ্যোক্তাকে। একজন অসহায় নারীকে তার সমস্যার বিষয়ে ইউএনও বরাবর বিনামুল্যে আবেদন করিয়ে দিবেন সেই উদ্যোক্তা। আবেদনের সাথে দরকার হবে রেভিনিউ স্ট্যাম্প। কিন্তু সেই সেবাটিও বিনামুল্যে দেয়া হবে তাদের। নারী সহায়তা কেন্দ্রে থাকবে একটি রেজিস্ট্রার। যে রেজিস্টার প্রত্যেকদিন ইউএনও নিজেই দেখবেন এবং রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ প্রত্যেকটি সমস্যার সমাধানও তিনিই দিবেন। নারী সহায়তা কেন্দ্রের পাশেই রয়েছে “হেল্প ডেস্ক কক্ষ” সেই কক্ষে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ তাদের সমস্যার কথা বলতে পারবেন।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও তমাল হোসেন বলেন, প্রায় ৫ মাস হলো গুরুদাসপুরে আমার যোগদানের। যোগদানের পর থেকেই দেখি- অনেক মহিলা অফিসের বাহিরে দাড়িয়ে থাকে। কখনও কখনও আমার অফিসে বেশি ভিড় থাকায় অনেকে বাড়ি চলে যায়। সেবা নিতে আসা গ্রামাঞ্চলের অসহায় নারী ও সাধারণ মানুষদের জন্যই আমার এই উদ্যোগ।
উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। কেননা গ্রামের অসহায় নারীদের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই ‘নারী সহায়তা কেন্দ্র’ করা হয়েছে। সকলেই এখন তাদের কাঙ্খিত সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন।
নাটোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ বলেন, জেলার গুরুদাসপুরেই প্রথম চালু করা হলো ‘নারী সহায়তা কেন্দ্র’। পর্যায়ক্রমে জেলার প্রত্যেক উপজেলায় এই কেন্দ্র চালু হবে। সাধারণ মানুষ ও নারীদের জন্য এটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আশা করি খুব ভালো সারা ফেলবে।