ইয়ানূর রহমান : আজ শনিবার যশোর সদর উপজেলা ও শহর আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যশোর ঈদগাহ ময়দানে এই সন্মেলনের প্রথম অধিবেশন ও পৌর কমিউনিটি সেন্টারে দ্বিতীয় অধিবেশন হবে। এ উপলক্ষে দলের বিভিন্ন ইউনিটে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সম্মেলনে যশোর সদর উপজেলার ৫৪৬ জন কাউন্সিলরদের নাম চুড়ান্ত হওয়ায় এই উৎসবের মাত্রা বেড়ে গেছে বহুগুন।
সভাপতি পদে তিনজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন পদপ্রার্থী রয়েছেন। সদর উপজেলার সভাপতি পদের পদপ্রার্থী মোহিত কুমার নাথ, মেহেদী হাসান মিন্টু ও শেখ আবদুল মতলেব এবং সাধারণ সম্পাদক পদে শাহারুল ইসলাম, আলীমুজ্জামান মিলন ও আবু তালেব। বিভিন্ন পদের দাবিদাররা সন্মেলনের তারিখ ঘোষনা হওয়ার পর থেকে ছুটে চলেছেন কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার ছুটছেন জেলার শীর্ষ নেতাসহ কেন্দীয় নেতৃবৃন্দের কাছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে প্রচারণার ঝড়।
এদিকে শহর আওয়ামীলীগের ২৫২ জন কাউন্সিলের নাম চুড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, ফিরোজ খাঁন ও কামাল হোসেন। সাধারণ সম্পাদক পদে মাহামুদ হাসান বিপু, আজাহার হোসেন স্বপন ও লুৎফুল কবীর বিজু। তারা ছুটে চলেছেন শহর আওয়ামীলীগের কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে।
সম্প্রতি জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দুর্নীতি মুক্ত করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং নিজেদের দলের ভেতরে প্রথম শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা ও সাধারণ জনগন বিপদে পড়লে যে সমস্ত সবসময় তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়, আগামীদিনে সেই সমস্ত ত্যাগী নেতাকর্মীরা মূল্যায়নের ভিত্তিতে সংগঠনে নেতৃত্ব দিবেন। এরই ধারাবাহিকতায় যশোর সদর উপজেলার তৃণমূলের নেতাকর্মিদের মতামতের ভিত্তিতে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার যশোর সদর উপজেলার সভাপতি প্রার্থী হিসেবে মোহিত কুমার নাথ, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে শাহারুল ইসলাম এবং শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মাহামুদ হাসান বিপুকে সমর্থন দিয়ে প্রার্থী ঘোষনা করেছেন।
২০০৪ সালে ফেব্রুয়ারিতে যশোর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের যশোর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের মোহিত কুমার নাথ সভাপতি ও মেহেদী হাসান মিন্টু সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত হন। আর যশোর শহর আওয়ামীলীগে এ্যাড. আবুল হোসেন সভাপতি ও আশরাফ আলী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
এ বিষয়ে সভাপতি প্রার্থী বর্তমান সভাপতি বাবু মোহিত কুমার নাথ বলেন, আমি ১৯৭১-১৯৭৩ সাল পর্যন্ত যশোর জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছি। ১৯৭৪ সালে বৃহত্তর যশোর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করি। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা হত্যাকান্ডের পরে যশোরে প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং পরবর্তীতে ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার কর্তৃক গ্রেফতার এবং সেনাবাহিনী দ্বারা চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে কারাবাস করি, ১৯৭৭ সালে জেল থেকে মুক্ত হয়ে কিছুদিন আত্মগোপনে থাকি। তারপর ১৯৭৭ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত যশোর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে আমার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছি। ১৯৮৪-১৯৯০ পর্যন্ত এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা ছিলো আমার। ১৯৮৬ সালে রাজপথের কর্মী হিসেবে সামরিক জান্তা আমাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। দীর্ঘ ৮ মাস কারাভোগের পর মুক্তি লাভ করে ফের রাজনীতিতে ও রাজপথে সক্রিয় হই।
তিনি আরো বলেন, ২০০৪ সালে যশোর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তৃণমুল ভোটারদের ভোটে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলাম। আমি সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছি সবসময়। এই সন্মেলনে তৃণমূলের ভোটাররা এবং জেলা আওয়ামীলীগের অভিভাবক জনাব শাহিন চাকলাদার এর সমর্থনে আমি পূণরায় সভাপতি প্রার্থি হয়েছি। আমি আশাকরি তৃণমূলের ভোটাররা আমাকে আবারও মূল্যায়ন করবেন। আমি দলের সাথে আছি সবসময়। আমি সবসময় আওয়ামীলীগের কর্মি ও সাধারণ জনগনের কল্যানে কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যহত রাখতে চাই।
এই প্যানেলের সাধারন সম্পাদক প্রার্থী শাহারুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে প্রার্থী হতে চাইনি তবে আমার কর্মী সমর্থক ও আমার দলের জেলার অভিভাবক শাহিন চাকলাদার চেয়েছেন বলে আমি প্রার্থী হয়েছি। তিনি বলেন, আমি চাই দলকে শক্তিশালী করতে তৃণমূলের ভোটার রা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।#