ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ধান-রসুন ছেড়ে ফুলকপি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

মো. আখলাকুজ্জামান,গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
এবারের শীত মৌসুমের শুরু থেকেই নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার কৃষকরা তাদের কৃষি জমিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ফুলকপিসহ বিভিন্ন সাথী ফসল চাষে। মূলত গত বছরও ধান-রসুনের সাথী ফসল হিসেবে এসব সবজি চাষ করছিলেন কৃষকরা। কিন্তু ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে সবজি চাষে ঝুঁকেছেন উপজেলার কৃষকরা। সবজি চাষ করে বাজারে ন্যায্য মূল্য পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখে কৃষকদের মুখে হাসি ফুঠেছে। অধিক লাভবান হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপজেলার খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষসহ দিনমজুর কৃষকরা।
শনিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষিজমি ঘুরে দেখা গেছে, যেসব জমিতে একসময় ধান-রসুনের চাষাবাদ হতো, সেসব জমিতে ফুলকপি ও শাকসবজির চাষ বেশি হচ্ছে। মাত্র ১৬ কাঠা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছেন উপজেলার তাড়াশিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক সলিমুদ্দিন। প্রথমে তিনি বাজার থেকে ৩০ গ্রাম ফুলকপির বীজ কিনেছিলেন ১৭শ টাকায়। সেই বীজ থেকে এখন তার জমিতে ৩০ হাজার ফুলকপির চারা রোপন করা হয়েছে। গাছও বড় হয়ে গেছে। আর এক মাসের মধ্যেই তার ফুলকপি বাজারে বিক্রির জন্য পরিপক্ক হয়ে উঠবে। এতে তার সার কীটনাশক ও ফুলকপির বীজ তুলে চারা রোপনের সময় কামলা খরচসহ মাত্র ৩ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। ভালো ফলন পেতে তিনি ডিএপি, ইউরিয়া, পটাশসাড় প্রয়োগ করছেন ফুলকপির জমিতে। নিয়মিত ফুলকপির জমি অতিযতœ সহকারে পরিচর্যাও করে চলেছেন তিনি।
লাভবান হওয়ার প্রসঙ্গে কৃষক সলিমুদ্দিন বলেন, এবারই প্রথম ফুলকপির চাষাবাদ শুরু করেছি এবং আল্লাহ সহায় থাকলে এবার শতভাগ লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ তিন হাজার টাকা খরচ করে ফুলকপি চাষে ৫০ হাজার টাকা লাভ হলে ধান-রসুন চাষের চাইতে ফুলকপির চাষাবাদ করাই ভালো বলে মনে করেন তিনি।
একই গ্রামের আরেক কৃষক সলিমুদ্দিন বলেন, ফুলকপি চাষী সলিমুদ্দিন আমার বন্ধু। ভেবেছিলাম জমিতে এবার রসুন লাগাবো। কিন্তু ধান-রসুনের দাম না থাকায় এবার সেই জমিতেই লাল শাক, পালং শাক ও ঢেঁড়সের চাষাবাদ করতে বাধ্য হয়েছি। বন্ধুর দেখাদেখি তার জমির পাশেই চারকাটা কৃষিজমিতে সবজি চাষ করে এখন পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি। তাতেও লাভবান হওয়ার সম্ভাবনায় দেখছেন তিনি।