এসএসসির ফরম পূরণে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষিত

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও পরিত্রাণ পাননি। উপজেলা শিক্ষা অফিসের এমন উদাসীনতায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে ১৮৯০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য হাজার ২০০৫ টাকা নির্ধারণ করে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু উপজেলার বেশিরভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্ধারিত ফি’র চেয়ে ৫০০ থেকে ১৩০০ টাকা বেশি আদায় করছে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এছাড়া কয়েকটি বিদ্যালয় ফরম পূরণের সাথে কোচিং ক্লাসের ফি’র নামেও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে কিছু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি রেজুলেশন করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। কিছু বিদ্যালয় তথ্য গোপন করে পরীক্ষার্থীদের চাপ দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ দিতে বাধ্য করেছেন অভিভাবকদের। এসব বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থের কোনো লিখিত রশিদ প্রদান করা হয় না।

উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার অষ্টমনিষা উচ্চ বিদ্যালয়ে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে ২৩০০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগে ২৪০০ টাকা করে ফরম পূরণে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পরীক্ষার আগে অতিরিক্ত কোচিং ক্লাসের নামে আরও ৬০০ টাকা করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী রবিন, রিন্টু ও সোহেল রানা সহ অন্তত দশজন শিক্ষার্থী এ অভিযোগ করে। একই অভিযোগ উপজেলার সদ্য এমপিওভুক্ত মমতাজ মোস্তফা আইডিয়াল স্কুলের বিরুদ্ধেও। বিদ্যালয়টিতে ফরম পূরণে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০০ থেকে ৩৩০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী আবির হাসান আশিক সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী এই অভিযোগ করেন। এছাড়া ভেড়ামারা উদয়ন একাডেমীতে ৩০০০ টাকা দিয়ে এক পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার অভিভাবক শাহ আলম কিরণ।

অতিরিক্ত ফি নেয়ার বিষয়ে অষ্টমনিষা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনসার আলী বলেন, খরচের কথা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২৪০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। তবে কোচিং এর নামে আরও ৬০০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

অতিরিক্ত ফি নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মমতাজ মোস্তফা আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম বলেন, বিদ্যালয়ের আনুষঙ্গিক কিছু খরচ আছে। সেই খরচ এবং বোর্ডের ফি মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২০০০ থেকে ৩৩০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। এই টাকা নেওয়া বৈধ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বিদ্যালয়ের প্রয়োজনে নেয়া হচ্ছে। অবৈধ কিনা জানা নাই।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি জেনেছি। এরই মধ্যে কয়েকজন প্রধান শিক্ষককে সতর্ক করা হয়েছে। বোর্ডে আসা-যাওয়া খরচ বাবদ সামান্য কিছু অতিরিক্ত টাকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিতে পারে। কিন্তু বেশি টাকা নিলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।