লিপন সরকার চলনবিল প্রতিনিধি : পাবনা,সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের চলনবিলে শীতের আমেজ পড়তে না পড়তেই গাছীরা খেজুর গাছ লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। চলনবিলের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, গুরুদাসপুর, চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া, সিংড়া, বড়াইগ্রাম এলাকার খেজুর গাছ মালিকদের থেকে খেজুর গাছের রসের জন্য চুক্তি ভিত্তিক নিয়ে গাছ লাগাতে শুরু করে দিয়েছে গাছীরা। শীতের দিনের অন্যতম আকর্ষণ খেঁজুর গুড়ের তৈরি পিঠা-পায়েস। প্রাচীনকাল থেকে সিরাজগঞ্জ তথা চলনবিল এলাকার খেঁজুর রসের যশ ছিল। দিন বদলের সঙ্গে এ এলাকা অনেক পরিবর্তন হয়েছে। শুধু পরিবর্তন হয়নি খেঁজুরের রস সংগ্রহ এবং গুড়-পাটালি তৈরির পদ্ধতি। এই সময় কৃষকের ঘরে আগাম জাতের রোপা আমন ধান উঠবে। আর নবান্ন উৎসবে সবাই খেজুরের গুড়ের বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করবেন। খেজুরের গুড়ের তৈরি পিঠা সকলের কাছেই প্রিয়। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলাসহ বিভিন্ন গ্রামগুলোতে ইতিমধ্যে গাছিরা খেঁজুর গাছ তোলা চাচার কাজ শুরু করেছে। কয়েক দিনের মধ্যে বাজারে নতুন খেঁজুর গুড়-পাটালি পাওয়া যাবে।
গাছী হাবিবুর রহমান জানান, শীতের আগমনী বার্তা দরজায় কড়া নাড়ছে তাই প্রতিবছররে মত এবছরও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গাছিরা চলনবিল এলাকায় এসে গাছ মালিকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা প্রথমে খেঁজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করেন। এরপর শুরু হয় রস সংগ্রহ। চিরাচরিত সনাতন পদ্ধতিতে মাটির কলসে রাতভর রস সংগ্রহ করা হয়।
ভোরের সূর্য ওঠার আগে গাছিরা রস ভর্তি মাটির কলস গাছ থেকে নামিয়ে পরে মাটির হাড়িতে কিংবা টিনের বড় হাড়িতে জ্বালিয়ে গুড়-পাটালি তৈরি করে। তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা ও সেরাজপুর গ্রামে দশজনের একটি গাছির দল এসেছেন রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট ও নাটোর এলাকা থেকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম লুৎফুন নাহার লুনা জানান, তাড়াশ উপজেলাসহ চলনবিল এলাকা খেজুর রস খুব মিষ্টি মধুর, তাছাড়া রস থেকে খেজুরের পাটালী গুড় তৈরি করা হয়। যা দিয়ে চলনবিলাঞ্চলের জনপদের মানুষ বিভিন্ন পিঠাপুলি তৈরি করে থাকেন।