১৭৬ রানের বোঝা, দ্রুত দুই উইকেট খোয়া যাওয়া। এরপর আবার উঠে দাঁড়ানো। নতুন করে স্বপ্ন বুনা-নাঈম শেখকে ঘিরে। শেষমেশ আবারও স্বপ্নভঙ্গ! হতাশার দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে মাঠ ছাড়া। রোববার (১০ নভেম্বর) রাতে নাগপুরের এমন দৃশ্যগুলো যেন লাল-সবুজের দর্শকদের মনে অনেকদিন গেঁথে থাকবে আফসোস আর রাজ্যের আক্ষেপ হয়ে। আবারও হতে হতেও হলো না ইতিহাস, বাংলাদেশকে ৩০রানে হারিয়ে তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজ নিজেদের করে নিলো ভারত।
খেললেন তো কেবল নাঈম। বাকিরা যেন এলেন, দেখলেন, চলে গেলেন। মোহাম্মদ মিঠুন আর নাঈম ছাড়া বাকিদের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে নাম উঠাতে পারেনি। তাতে ষোলআনাই লাভ প্রতিপক্ষ বোলারদের। কেউ পেলেন টি২০’র নতুন রেকর্ডের দেখা। কেউ আবার করলেন হ্যা্টট্রিকও।
তার আগে বাংলাদেশি বোলারাও ছিলেন নিশ্প্রভ। কেউ ভেলকি দেখিয়ে নিভে গেছেন। কেউ বেধড়ক পিটুনি খেয়েছেন। আর ভারত এই সুযোগে রান তুলল পাহাড়ের কাছাকাছি। আর টস জিতে বোলিং নেওয়াটাও কী ঠিক ছিল? ভোট বলি কিংবা যুক্তি-তর্ক ‘না’ জয়যুক্ত হবে। তাছাড়া ব্যাট হাতে কিন্তু প্রতিপক্ষ ভারত সেই ব্যাখ্যাটা ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৪ রানের বড়সড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে দেন তারা। আর বাংলাদেশ দৌড়ে ১৪৪’এ থামল।
এ দিন বল হাতে শুরুতেই বাংলাদেশকে সাফল্য উপহার দেন পেসার শফিউল ইসলাম। আগের ম্যাচের নায়ক রোহিত শর্মাকে ব্যক্তিগত ২ রানের মাথায় সরাসরি বোল্ড করেন তিনি। এরপর দলীয় ৩৫ রানে আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ানও শফিউলের শিকার হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন।
নিয়মিত বিরতিতে দুই উইকেট খুইয়ে খানিকটা বিপাকে পড়ে যায় ভারত। তবে সেই জায়গা থেকে দলের হাল ধরেন লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াস আইয়ার। বিশেষ করে রাহুল ব্যাট হাতে ক্রমেই মারকুটে হয়ে উঠেন। ব্যক্তিগত ফিফটিও আদায় করে নেন তিনি। তারপর দলীয় ৯৪ রানের মাথায় রাহুলকে প্যাভিলিয়নে পাঠান আল আমিন হোসেন। দারুণ এক স্লোয়ার লেগ কাটারে পুরোপুরি পরাস্ত করেন রাহুলকে।
এরপর টাইগারদের চতুর্থ ও পঞ্চম উইকেট এনে দেন সৌম্য সরকার। প্রথমে নিখুঁত স্লোয়ারে পরাস্ত করেন উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান রিশভ পন্তকে। এরপর তার বলেই পথ হারান ব্যাট হাতে ঝড় তোলা শ্রেয়াস আইয়ার। তবে আউট হওয়ার আগে ৩৩ বলে ৩ চার এবং ৫ ছক্কায় ৬২ রান যোগ করেন শ্রেয়াস।
অথচ রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় হতো তার। ভারতের ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে শফিউল ইসলামের বলে সহজ ক্যাচ তুলে দেন শ্রেয়াস। কিন্তু আমিনুল ইসলাম বিপ্লব বল হাতে রাখতে পারেননি। আর সেই শূন্য রানে জীবন পাওয়া আইয়ার শেষ পর্যন্ত ভারতকে এনে দেন বড় পুঁজি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ২০ ওভারে ১৭৪/৫ ( রোহিত ২, ধাওয়ান ১৯, রাহুল ৫২, শ্রেয়াস ৬২, পান্ত ৬, মনিশ ২২*, দুবে ৯*; আল আমিন ৪-০-২২-১, শফিউল ৪-১-৩২-২, মুস্তাফিজ ৪-০-৪২-০, আমিনুল ৩-০-২৯-০, সৌম্য ৪-০-২৯-২, আফিফ ১-০-২০-০)।
বাংলাদেশ: ১৯.৫ ওভারে ১৪৪ (লিটন ৯, নাঈম ৮১, সৌম্য ০, মিঠুন ২৭, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৮, আফিফ ০, আমিনুল ৯, শফিউল ৪, মুস্তাফিজ ১, আল আমিন ০*; খলিল ৪-০-২৭-০, সুন্দর ৪-০-৩৪-০, চাহার ৩.২-০-৭-৬, চাহাল ৪-০-৪৩-১, দুবে ৪-০-৩০-৩)।
ফল: ভারত ৩০ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: দীপক চাহার
সিরিজসেরা: দীপক চাহার
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজ ২-১ জিতল ভারত।