বাংলাদেশে নির্মীয়মান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের রেফারেন্স হিসেবে বিবেচিত আরও একটি ভিভিইআর- ১২০০ পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট নির্ধারিত সময়ের ৩০দিন আগেই বানিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে। রসাটমের স্থানীয় গণমাধ্যম সংস্থা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রুশ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ- রসটেকনাদজর-এর অনুমোদন লাভের পর ১লা নভেম্বর রাশিয়ার নভোভারোনেঝ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প-২ এর দ্বিতীয় ইউনিটটির বানিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে একই প্রকল্পের ভিভিইআর- ১২০০ রিয়্যাক্টরভিত্তিক প্রথম ইউনিটটি চালু হয় এবং ২০১৭ সালে একই ধরনের আরও একটি ইউনিট উদ্বোধন করা হয় লেনিনগ্রাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প-২ এর অধীনে।
রুশ রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন- রসাটমের প্রথম উপ-মহাপরিচালক (অপারেশন্স ব্যবস্থাপনা) এবং এএসই গ্রæপ অব কম্পানিজের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লোশকিন বলেন, “বিদেশের প্রকল্পগুলোর জন্য আমরা এখন এই ডুয়েল-ইউনিট পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ডিজাইনটি রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারবো”। তিনি আরও জানান, “নির্মান, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, ক্রয় ও অর্থায়ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি আমরা অব্যাহতভাবে আমাদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। আজকের দিনে বাজার চাহিদা মেটাতে এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন”।
সদ্য চালুকৃত ইউনিটিটি রাশিয়ার ৩৬তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ । এটির বানিজ্যিক উৎপাদন শুরু হওয়ার ফলে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে পারমাণবিক বিদ্যুতের অবদান ২৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং এর ফলে প্রতি বছর গড়ে ৪০ লক্ষ টন গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন রোধ সম্ভব হবে।
আগের প্রজন্মেও ভিভিইআর- ১০০০ রিয়্যাক্টরভিত্তিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিটের তুলনায় ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর- ১২০০ রিয়্যাক্টরভিত্তিক বিদ্যুৎ ইউনিটে যে সকল অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা সুবিধা যুক্ত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে- ২০ শতাংশ বেশি উৎপাদন ক্ষমতা, পরিচালনার জন্য ৩০-৪০ শতাংশ কম লোকবল, দ্বিগুন লাইফটাইম- ৬০বছর, যা আরও ২০বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব।
ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি, চীন, বাংলাদেশ এবং বেলারুশ অত্যাধুনিক এবং সর্বোচ্চ নিরাপদ রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর প্রযুক্তি বেছে নিয়েছে এবং অন্যান্য অনেক দেশ এটির প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ প্রদর্শন করছে। রসাটম এই সকল দেশগুলোতে ভিভিইআর- ১২০০ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করছে। এখানে উল্লেখ্য যে, সারা বিশ্বের ১২টি দেশে রসাটম কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ৩৬টি ভিভিইআর প্রযুক্তির পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।
প্রসঙ্গত: রুশ আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পাবনা জেলার রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। রূপপুর প্রকল্পে দু’টি ভিভিইআর- ১২০০ ইউনিট থাকবে, প্রথমটি ২০২৩সালে এবং দ্বিতীয়টি পরবর্তী বছর উৎপাদন শুরু করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।