মোঃ নূরুল ইসলাম, চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি ::
পাবনার চাটমোহর উপজেলায় বিভিন্ন সমিতির নামে চলছে জমজমাট সুদের ব্যবসা। এ সমিতির খপ্পোরে পড়ে নিরীহ মানুষ হচ্ছে সর্বশান্ত। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাটমোহর উপজেলা পৌর সদরসহ ইউনিয়নের গ্রাম-গঞ্জে চলছে জমজমাট সুদের ব্যবসা।
চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা, জালেশ্বর, রামচন্দ্রপুর, পৈলানপুর, কুমারগাড়া, নতুনপাড়া, দহপাড়া, বোয়াইলমারী, মল্লিকচক, হরিপুর সুদের ব্যবসা লক্ষ করা যাচ্ছে।
আরও জানা গেছে, নামে-বেনামে গড়ে উঠা এ সমিতিগুলো চড়া সুদ গ্রহণ করে। পরে কিস্তি হিসেবে সুদ গ্রহণ করার চেয়ে বেশি টাকা দেয়া সত্বেও টাকা পরিশোধ হয় না। এ নিয়ে এলাকায় গ্রাম্য শালিশি বৈঠক বসার মাধ্যমে সুদ গ্রহণ কারিদের স্ত্রীর সর্ণলংকার, গরু-ছাগল, ঘরের টিন বিক্রি করে সুদ গ্রহণ কারিদের টাকা পরিশোধ করতে হয়।
অপরদিকে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে তাদের বিভিন্ন সময় লাঞ্চিত, মারপিট ও মামলার হুমকি দিয়ে থাকে। এমন কি তাদের ভয়ে অনেকে পালিয়ে বেড়ায়। এতে বেশি স্বীকার হয় দিন আনে দিন খায় এমন পরিবারের লোকজন।
এ ব্যাপারে সাবেক চেয়ারম্যান মো. গোলাম মওলা বলেন, ছোট ছোট সমিতির নামে গরিব নিরীহ মানুষকে বেশি দরে সুদ দিয়ে থাকে এলাকার প্রভাবশালী কিছু লোকজন। এর খপ্পোরে পড়ে কিছু নিরীহ মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। সরকারি ভাবে এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের মহেলা গ্রামের সাহেব আলী জনৈক এক সুদখোরের কাছ থেকে প্রতি মাসে হাজারে ২০০ টাকা সুদসহ ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। তাকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা সুদ ৪ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হতো। পরে ৬ মাসে সে ২৬ হাজার টাকা সুদসহ মোট ৪৬ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সুদ গ্রহণকারি বলেন, একটি সমিতি থেকে ১০ হাজার টাকা সুদ নিয়েছিলাম, কিন্তু এক বছরের মধ্যে ১৫ হাজার ৩’শ টাকা দেয়ার পরে আজও টাকা শোধ হয়নি। এ অঞ্চলে প্রায় ১ হাজারের বেশি ছোট বড় সমিতি রয়েছে।
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, এ সমিতি গুলোর সদস্য প্রতি দুই দিন অর্থাৎ হাটবারে, আবার মাসিক ভাবে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা কিস্তি হিসেবে সমিতিতে জমা করে। ওই জমাকৃত টাকা সাধারন মানুষের মধ্যে চড়া সুদে বিতরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার জানায়, অবৈধ ভাবে সমিতির মাধ্যমে সুদের ব্যবসা ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয়নি। এ সুদের টাকার মাধ্যমের মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে, এ ধরণের অভিযোগ পেলেই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।