পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনার সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মুন্সির ছেলে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আমির সোহেল মিলনকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক লেখক ভট্রাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। বহিষ্কারের পর এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করে মিষ্টি খেয়ে আনন্দ উল্লাস করেছেন।
সম্প্রতি মিলনের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নজরে আসে। পরে তারা বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগে তাকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক তাজুল ইসলাম বষ্কিারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের গ্রাম কমিটি করার সময় আওয়ামীলীগ নেতাদের উপর হামলা চালায় মিলনসহ তার বাহিনী। এতে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বিজ্ঞা ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লাহ সুইটসহ কমপক্ষে ১৫জন নেতাকর্মী মারাত্মক আহত হয়। বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খব প্রকাশিত হলে জেলা ছাত্রলীগের নিকট কেন্দ্র থেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। পরে তদন্ত সাপেক্ষে আামির সোহেল মিলন ও তার বাহিনীর সকল অপকর্মের সত্যতা মিললে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তগ্রহন করেন।
সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম রিন্টু বলেন, এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি তার বাবা আব্দুল কুদ্দুস মুন্সি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পরে এলাকার মানুষ। চেয়ারম্যান ও তার ছেলে মিলন মিলে এলাকায় সুদের কারবার, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, শালিসী বানিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে গেলেই তাদের ধরে নিয়ে মিলন বাহিনীর নিজস্ব টর্চার সেলে নিয়ে ব্যাপক মারপিট করার অভিযোগও রয়েছে। এই বাহিনীর অত্যাচারে ইতিমধ্যেই সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন থেকে অন্তত দেড়শত পরিবার ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছন। বিষয়টি নিয়ে দলের উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দকে অবহিত করার পরেও তাদের নিয়ন্ত্রনে আনতে পরেনি জেলা নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রইচ উদ্দিন খান বলেন, গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ৭ নং ওয়ার্ডের একটি গ্রাম কমিটি করার সময় সবার প্রত্যক্ষ সমর্থনে মিলন ও তার বাবার অনুগত লোক সভাপতি সম্পাদক পদে হেরে গেলেই আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ মঙ্গলবার রাতে একটি তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সকল কার্যক্রম স্থগিত করে দেন। পরবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি। শুধুমাত্র মিলন ওতার পরিবারের অপকর্মের জন্যেই উপজেলা আওয়ামীলীগ এই সিদ্ধান্ত নেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হক টিপু বলেন, আমরা ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করে মিলন ও তার বাবার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কার্যক্রম স্থগিত করেছি।