সিলেটের বিশ্বনাথে চরচন্ডি নদীর ওপর সরকারি ভূমিতে অবৈধভাবে নির্মানকৃত দালান মার্কেট উচ্ছেদ করা হয়েছে। (২২ অক্টোবর) মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের পশ্চিম নোয়াগাঁও গ্রামে বয়ে যাওয়া চরচন্ডির নদীর ওপর নির্মিত কলমদর আলী মার্কেট উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অবশেষে সেই মার্কেটে নির্মিত ছয়টি দালান দোকানঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিলেটের নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি ফাতেমা তুজ জোহরা, বিশ্বনাথ থানার একদল পুলিশ। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হওয়ায় জনমনে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের এই মহতি উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।জানাগেছে, বিশ্বনাথ উপজেলার এক সময়ের খড় স্রোতা চরচন্ডি নদী দখল করে স্থায়ীভাবে মার্কেট নির্মাণ করছেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি উপজেলার দশঘর ইউনিয়ন নোয়াগাঁও গ্রামের আবদুল তাহিদ। তিনি ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় সরকারি নদী দখল করে ওই মার্কেট নির্মাণ করেছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। গত ২০১৭ সালে নদীর পানি নিস্কাসনের ব্যবস্থা বন্ধ করে নদীর উপর দালানের তৈরি এই মার্কেট নির্মাণ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। তখন তার বিরুদ্ধে একটি উচ্ছেদ মামলা দায়ের করেন তৎকালিন ইউনিয়ন তফসিলদার অজিত পাল চৌধুরী। মামলা নং-(৫)। আজ মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে ওই মার্কেটটি ভেঙ্গে নদীর চর দখলমুক্ত করা হয়। তবে বাসিয়া নদীর শুরু থেকে চরচন্ডি নদীর উপর নতুন ও পুরাতন হাবড়া বাজার এবং আব্দুল তাহিদের ভেঙ্গে দেয়া মার্কেটের দক্ষিণ পাশে আরও শতশত স্থাপনা বহাল রয়েছে। ফলে পানি নিস্কাসনে বাঁধা সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি নদীটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। চরচন্ডি নদী বিশ্বনাথ উপজেলার বাসিয়া নদী থেকে শুরু হয়ে মাকুন্দা নদীর সাথে সংযুক্ত। এক সময়ের খড়স্রোতা ওই নদীটি প্রভাবশালীদের দখলে পড়ে বিলীন হতে চলেছে। বাসিয়া নদীর সাথে সংযুক্ত অংশ থেকে শুরু করে নদীর তীরে নতুন ও পুরাতন হাবড়াবাজার, মাছুখালিবাজার এবং নোয়াগাঁও মার্কেট পর্যন্ত অনেক স্থানে দখল ও ভরাটের ফলে নদীটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। আবার অনেকেই নিজ বসত বাড়ির সীমানা প্রাচীরের ভেতরেও ঢুকিয়েছেন নদীর অংশ। আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল তাহিদ নোয়াগাঁও মার্কেট নামক বাজারে বিশ্বনাথ-ছালিয়া সড়কের পার্শ্বে সরকারি ১নং খতিয়ানের জে.এল নং ১০১ এবং ২৮৫১,২৮৫২ দাগের নদীর প্রায় অর্ধেক অংশ দখল করে প্রায় ৫০ হাত লম্বা স্থায়ীভাবে মার্কেট নির্মাণ করেছেন। অবশেষে সেই মার্কেট উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তবে এব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল তাহিদের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মোতাবেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সরকারি ভূমির ওপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরিয়ে নিতে মালিকদের নোটিশ দিলেও তারা শোনেননি বলে তিনি জানান।