গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত তরুন প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতারণার শিকার ৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী ডোনেশন বাবদ দেওয়া ১১ লাখ এবং ৪ বছরের বেতন-ভাতার সাড়ে ১৩ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে আদালতে মামলা করেছে। উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে তরুন প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক আব্দুল মজিদ মিয়া বাদি হয়ে ২০ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার বিজ্ঞ আমলী আদালতে মামলা করে। মামলায় ফাউন্ডেশনের স্থানীয় প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম মজনু, প্রকল্প পরিচালক মোর্শেদ আলম কমল এবং ভাইস চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদকে আসামি করা হয়েছে। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর ফাউন্ডেশনের স্থানীয় প্রতিনিধি ঘগোয়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম মজনু মিয়া ফাউন্ডেশন পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে একই গ্রামের নুরুল ইসলাম, আরিফা বেগম, নাজমুল ইসলাম, আব্দুল মজিদ, মনোয়ারা বেগম ও ইলিয়াস মিয়াকে প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক ও পিয়ন পদে চাকরির জন্য প্রস্তাব দেয়। স্থানীয় বেশ কয়েকজন সুধীজনের মোকাবেলায় ৬ জনের নিকট থেকে ডোনেশন বাবদ ১১ লাখ বুঝে নিয়ে সাইফুল ইসলাম ২০১৬ সালের ১ ফেব্রæয়ারী তরুন প্রি-ক্যাডেট স্কুলে তাদেরকে যোগদান করার পরামর্শ দেয়। সাইফুলের কথামত বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশনের প্যাডে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে তারা যোগদান করে। নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে প্রতিমাসে প্রধান শিক্ষক ৯ হাজার, সহকারি শিক্ষক ৭ হাজার এবং পিয়ন ৪ হাজার টাকা বেতন ভাতা পাবে। সে মোতাবেক শিক্ষক-কর্মচারিগণ চাকরি করে আসছে। দীর্ঘদিন যাবত কোন প্রকার বেতন ভাতা না পাওয়ায় শিক্ষক কর্মচারিগণ স্থানীয় প্রতিনিধি সাইফুলকে কয়েক দফা চাপ দেয়। সাইফুল জানায় সংস্থা টাকা দিলে একবারে আপনারা বেতন ভাতা পারেন। এরই এক পর্যায়ে শিক্ষক কর্মচারিগণ ফাউন্ডেশনের ঢাকার অফিস মধ্য বাড্ডায় যোগাযোগ করে দেখতে পায় ওই নামে কো ফাউন্ডেশন নাই এবং প্রকল্প পরিচালক মোর্শেদ আলম কমল নামের ব্যক্তি সেখানে থাকে না। বর্তমানে শিক্ষক কর্মচারিগণের বেতন ভাতা বাবদ মোট টাকার পরিমাণ দাড়িয়েছে সাড়ে ১৩ লাখ। প্রতারণার ফাঁদে পড়ে শিক্ষক কর্মচারিগণ মানবেতর জীবন যাপন করছে।
স্থানীয় প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম মজনু জানান, ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালকের কথা মোতাবেক শিক্ষক কর্মচারিদের নিকট থেকে ডোনেশনের টাকা নিয়ে তাকে দিয়েছে। এর পর থেকে তার সাথে কোন যোগাযোগ হচ্ছে না।
মামলার বাদী ও সহকারি শিক্ষক আব্দুল মজিদ জানান, বেতন ভাতাসহ ডোনেশনের টাকার জন্য সাইফুলকে বার বার চাপ প্রয়োগ করেও কোন প্রতিকার আজও পাইনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার হারুন-উর রশিদ জানান, বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত তরুন প্রি-ক্যাডেট স্কুল নামে কোন প্রতিষ্ঠানের তথ্য তাঁর অফিসে নাই। তাছাড়া এ ধরনের কোন ফাউন্ডেশনের নাম তিনি জানেন না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলী জানান, বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত তরুন প্রি-ক্যাডেট স্কুলের নাম এই প্রথম শুনলাম। এ সংক্রান্ত কোন তথ্য তাঁর জানা নাই।