অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে প্রতি মাসে ৪ লাখ টাকা পেতেন ঢাকার স্থানীয় একজন সংসদ সদস্য। কোনো মাসে টাকা পাঠাতে দেরি হলে সংশ্লিষ্ট ক্যাসিনো পরিচালনাকারীদের ফোন করে ধমকও দিতেন তিনি। যুবলীগের বহিষ্কৃত দুই নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। প্রতি মাসে কোন তারিখে, কার মাধ্যমে ক্যাসিনোর টাকা ঐ সংসদ সদস্যের কাছে পৌঁছানো হতো তার বিস্তারিত তথ্য সম্রাট-খালেদ বলে দিয়েছেন। বিষয়টি সম্প্রতি সরকারের হাইকমান্ডকে জানানো হয়েছে। জানা গেছে, ঐ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার তথ্য-উপাত্ত ও অডিও রেকর্ড সংগ্রহ করা হচ্ছে।
রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবের অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এর মালিক যুবলীগের বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়াকে। ক্লাবটির গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হলেন একজন এমপি। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে ঐ এমপি বলেন, ক্যাসিনো সম্পর্কে কিছুই জানতাম না, ক্যাসিনো চলছে কিনা তা দেখভাল করা গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। তিনি আরো বলেন, এলাকার সংসদ সদস্য হিসেবে আমাকে ইয়ংমেন্স ক্লাবের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। এলাকার কোথায় কী ঘটছে, তার খবর রাখার দায়িত্ব সংসদ সদস্যের নয়, পুলিশের। তিনি বলেন, আমি জানি ইয়ংমেন্সের ফুটবল টিম আছে। ক্রিকেট খেলে। আমাকে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সেখানে একদিন নিয়ে যায় এবং বলা হয়, আপনি ক্লাবের চেয়ারম্যান হবেন। আমি বলেছিলাম, ঠিক আছে। ব্যস ঐটুকুই। আমি এরপর আর কখনো সেখানে যাইনি।
কোটি কোটি টাকার ক্যাসিনো সেটাপ, নারী-পুরুষ এনে সেগুলো পরিচালনা করাসহ নানা অবৈধ কাজ চলতো ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়ার নিয়ন্ত্রণে। এত বড়ো আয়োজনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জানতো না? জানলেও তারা চুপ ছিল কেন? আটকের পর র্যাব কার্যালয়ে তাদের কাছে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ক্যাসিনো থেকে উপার্জনের টাকা কার কার কাছে যেত, সে নিয়েও প্রশ্ন করা হয় তাদের। ফকিরাপুল, আরামবাগ, মোহামেডানসহ মতিঝিল এলাকায় ইয়ংমেন্স ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, মোহামেডান ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো চালানোর জন্য ঐ সংসদ সদস্যকে টাকা দিতে হতো।