নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ফসলের মাঠ থেকে ইঁদুর তাড়িয়ে সম্মাননা পেয়েছেন মুক্তার মোল্লা নামের এক দিনমজুর। নিজের জমি নাই তবুও ফসলের ক্ষতির হাত থেকে কৃষকদের বাঁচাতে দশ বছর ধরে স্বেচ্ছাশ্রমে মাঠ থেকে ইঁদুর তাড়ানোর কাজটি করেন তিনি। কৃষি ক্ষেত্রে এমন ব্যতিক্রমী অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ কৃষি বিভাগ থেকে তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। বুধবার মাস ব্যাপী ইঁদুর নিধন অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাকে সম্মাননা উপহার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল। দিনমজুর মুক্তার মোল্লা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চকহরিরামপুর গ্রামের আব্দুস সামাদ মোল্লার ছেলে।
জানা গেছে, ইঁদুর মারার এক অদ্ভুত নেশায় মুক্তার মোল্লা প্রায় দশ বছর ধরে উপজেলার চকহরিরামপুর, হরিরামপুর, তমালতলা, যোগীপাড়া, কোয়ালীপাড়াসহ আশে-পাশের মাঠে মাঠে ইঁদুর শিকারের খোঁজে ঘুরে বেড়ান। প্রতিদিন বিকাল হলেই ফসলের মাঠে ইঁদুর শিকারে নেমে পড়েন। আগে বিষটোপ দিয়ে ইঁদুর শিকার করতেন। এখন সিটকা ফাঁদে (ইঁদুর মারার যন্ত্র) ইঁদুর শিকার করেন। ফাঁদে আটকে পড়া ইঁদুরগুলো মাটিতে পুঁতে দেন। প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টি ইঁদুর মারেন। এ দশ বছরে অন্তত ৫০ হাজার ইঁদুর মারার দাবি করেছেন তিনি। এখন এসব মাঠে ইঁদুরের উপদ্রব অনেকটায় কমে গেছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। ইঁদুর তাড়ানোর নেশার কারনে স্থানীয়রা তাকে এখন ‘জার্মানির হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’র সাথে তুলনা করতে শুরু করেছেন।
কৃষি অফিস জানায়, ফসলের বড় শত্রু ইঁদুর নিধন করে ফসলের ক্ষতি ঠেকাতে মুক্তার মোল্লার কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। বিষয়টি নজরে এলে স্থানীয় কৃষি বিভাগ তার এ ভাল কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে সম্মাননা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। উপজেলা জিমনেসিয়ামে অনুষ্ঠিত ইঁদুর নিধন অভিযানের ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে র্যালি শেষে এক আলোচনা সভায় ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম বকুল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খোদিজা বেগম শাপলা, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাদী। স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী।