অর্মত্য সেনের পর এবার অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন আরেক বাঙালি। আমেরিকায় বসবাসকারী ওই প্রবাসী বাঙালির নাম অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সঙ্গে নোবেল পেয়েছেন ফরাসি স্ত্রী এসথের ডুফলোও।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) ২০১৯ সালের অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার তিনজনকে দেওয়া হয়। অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় দম্পতি ছাড়াও যৌথভাবে নোবেল পান মাইকেল ক্রেমারও।
রয়্যাল নোবেল কমিটি জানায়, গত দু’দশক ধরে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য নিরলস গবেষণা করছেন ওই তিনজন। তাদের নতুন পরীক্ষা-ভিত্তিক পদ্ধতির জন্য অনেক পরিবর্তন এসেছে উন্নয়নের অর্থনীতিতে। এর মাধ্যমে গবেষণার নতুন নতুন দিক খুলে গেছে। এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বের ৭০ কোটি মানুষ অতি দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছেন। প্রতিবছর ৫০ লক্ষের বেশি শিশু তাদের পাঁচ বছরের জন্মদিনের আগেই প্রাণ হারাচ্ছে। এই অবস্থায় তিনজন অর্থনীতিবিদের গবেষণা তাদের জীবনের মানোন্নয়নে সহায়ক হবে। সেই কারণে তাঁদের নাম নোবেল পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।
কে এই অভিজিৎ দম্পতি
১৯৬১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান। আর মা নির্মলাদেবী ছিলেন সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস, কলকাতার অর্থনীতি বিভাগের একজন অধ্যাপক।
অভিজিৎ সাউথ পয়েন্ট স্কুলের পালা সাঙ্গ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে অর্থনীতি নিয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৮১ সালে অর্থনীতিতে বি.এস ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৮৩ সালে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম.এ পাশ করেন। ১৯৮৮ সালে পিইচডি করার জন্য ভর্তি হন ইংল্যান্ডের হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বর্তমানে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক অধ্যাপক হিসেবে এমআইটি-তে কর্মরত আছেন অভিজিৎ বিনায়ক। বিশ্বের দারিদ্র্য নিয়ে গবেষণার জন্য ২০১৩ সালে তিনি এবং এসথের ডুফলো মিলে ‘আবদুল লতিফ জামিল পোভার্টি অ্যাকশন ল্যাব’ গড়ে তোলেন। সেখানে তাদের পরীক্ষামূলক গবেষণাকেই সম্মান জানিয়েছে নোবেল কমিটি।
অভিজিৎ জাতিসংঘেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৫ পরবর্তী ডেভেলপমেন্ট এজেন্ডা কর্মসূচিতে জাতিসংঘের মহাসচিবের উচ্চপর্যায়ের প্যানেলের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি ছিলেন তিনি।
এই বাঙালি অর্থনীতিবিদ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের (এনবিআর) অর্থনীতি গবেষণা বিভাগের প্রথম প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।
অর্থনীতি বিষয়ে বিনায়কের লেখা চারটি বই বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। তার মধ্যে ‘পুওর ইকোনোমি’ বইটি গোল্ডম্যান সাচস বিজনেস বুক সম্মানে ভূষিত হয়।