এস এম আলম: একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির হত্যার রহস্য ২৪ ঘন্টার ঘন্টার মধ্যে উদঘাটন করেছে পাবনা জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) । গত ৭ অক্টোবর সকাল ০৮.১৫ টায় ঈশ্বরদী থানাধীন দাশুরিয়া-পাবনা মহাসড়কের উত্তর প¦ার্শে একজন অজ্ঞাতনামা বয়স অনুমান (৪০) পুরুষ ব্যক্তির লাশ হাত, পাঁ, মুখ চিকন রশি দ্বারা বাঁধা অবস্থায় গলায় গামছাসহ পড়ে ছিল। এ ঘটনার বিষয়ে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানা পুলিশবাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানার মামলা নং-১৭(১০)১৯ দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ মামলার তদন্তভার পিবিআই, পাবনা জেলার উপর অর্পণ করেন। পিবিআই, পাবনা জেলা প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্তের নির্দেশনা দেন । ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মামলাটির রহস্য উদঘাটন করে মামলার ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করেন ও নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম থানা এলাকা হতে চার জন আসামী গ্রেফতার করেন।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামীরা একটি সংঘবন্ধ ছিনতাইকরাী চক্র। তারা বিভিন্ন জেলার গরু মহিষের হাট হতে ট্রাকে ভাড়া নেওয়ার কথা বলে গরু মহিষ তুলে এবং সুবিধা মতো স্থানে গিয়ে গরু মহিষের মালিকদের হাত, পাঁ বেঁেধে মারধর করে রাস্তার মধ্যে ফেলে গরু মহিষ নিয়ে পালিয়ে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৬ অক্টোবর রাজশাহী সিটির হাট হতে গরু মহিষ ছিনতাই করার লক্ষ্যে পাবনা জেলার আমিনপুর থানার মনির(ছদ্ম নাম) আরোও দুই জন সহযোগীসহ একটি ট্রাক নিয়ে রাজশাহী সিটির হাটে যায়। মনির মোবাইল করে তাদের সহযোগী নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম থানাধীন রশিদ(ছদ্ম নাম), রমজান, মিজানুর,আব্দুল শুকুর ও আকছেদকে ডেকে নেয়। তারা রাজশাহী সিটির হাট হতে দুইটি বড় মহিষ ভাড়ায় তোলে। মহিষের সাথে তিন জন লোক ছিল। সন্ধ্যার পর মহিষ নিয়ে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া থানা পার হওয়ার পর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ৮ জন মিলে মহিষের মালিক তিন জনের হাত, পাঁ, মুখ বেঁধে ফেলেএবং মারপিট করে। তারপর তারা ট্রাক নিয়ে নাটোর বনপাড়ার পাশে দুই জনকে হাত, পাঁ, মুখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে দেয়। বাকী একজনকে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার সুগার মিলের পাশে রাস্তার ধারে ফেলে চলে যায়। হাত, পাঁ, মুখ শক্ত করে বাঁধার কারণে ট্রাকের ভিতরেই সে মারা যায়। তারপর তারা মহিষ দুটি নিয়ে ঢাকা জেলার বাথুলী নামক হাটে মহিষ বিক্রি করে টাকা ভাগ করে নিয়ে চলে যায়।
পরবর্তীতে তদন্তে জানা যায় যে, নাটোর জেলার সদর থানাধীন জয়নগর গ্রামের জান মোহাম্মদের ছেলে ভিকটিম জাহাঙ্গীর ও সেলিমসহ রাজশাহী জেলার সিটির হাটে মহিষ কিনার জন্য গিয়েছিল। তারা ২,৫০,০০০/- টাকা দিয়ে দুইটি মহিষ কিনে ছিনতাইকারীদের খপ্পরে পড়ে। লাশটি জাহঙ্গীরের ছিল বলে জানা যায়।
পিবিআই, পাবনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ তরিকুল ইসলাম জানান যে, উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে জড়িত আসামীরা একটি বড় গ্যাং এর সদস্য। তারা দেশের বিভিন্ন জেলায় গরু মহিষ ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ করে থাকে। তাদের স্বীকারোক্তি মতে অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।