সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ
দৈনিক আমাদের সময়ে “সাঁথিয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বুধবার এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেন পাবনা পিটিআই এর সুপারিনটেনডেন্ট সুভাস কুমার বিশ্বাস।
গত ২৬ সেপ্টেম্বরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (ত: ও শৃ:) সৈয়দা মাহফুজা বেগমের স্বাক্ষরিত আদেশে এ তদন্ত নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী ১০ কার্য দিবসে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বাক্ষী ও ঘুষ গ্রহণকারী উচ্চমান সহকারী গোলজার হোসেনের বক্তব্য গ্রহণ করেন।
সোনাতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্বাক্ষী হান্নানসহ অনেক শিক্ষক জানান আমরা গোলজার হোসেন ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার মর্জিনা খাতুনের বিরুদ্ধে বক্তব্য পেশ করেছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসে উচ্চমান সহকারীর গোলজার হোসেন জানান, আমি শিক্ষা অফিসার মর্জিনা খাতুনের নির্দেশে কাজ করেছি। যে টাকা আমি গ্রহণ করেছি তার সম্পূর্ণ অংশই তাকে দিয়েছি।
পাবনা পিটিআই এর সুপারিনটেনডেন্ট সুভাস কুমার বিশ্বাস জানান, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সাথে তদন্ত তথ্যের মিল আছে। আমি তদন্ত প্রতিবেদন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পাঠাবো। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, তদন্তে অন্য ব্যক্তির নাম আসলে সেটাও আমরা প্রতিবেদনে লিখব।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, সাঁথিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র, ভুক্তভোগী শিক্ষক ও বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং এসএমসি সভাপতির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয় প্রতি স্লিপ বরাদ্দ, রুটিন মেইনটেন্যান্স (টুকটাক মেরামত) বাবদ বরাদ্দ, বড় মেরামত বাবদ অনেক স্কুলে সরকারি বরাদ্দ এসেছে ২ লাখ টাকা করে। এ সব টাকা চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব স্কুলের হিসাব নম্বরে স্থানান্তরের কথা। এমনকি স্লিপের টাকা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অ্যাকাউন্টে আসার ৩ দিনের মধ্যে সব স্কুলের হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করার কথা। স্কুলের হিসাব নম্বর পরিচালিত হয় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে। তিনি ৩০ জুনের মধ্যে একটি স্কুলেও কোনো টাকা ছাড় করেননি। বরং সে টাকা তিনি নিজের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে শিক্ষকদের নিকট থেকে উৎকোচ গ্রহণ করেন।
উৎকোচ গ্রহণের ভিডিওফেসবুকে ভাইরাল হয়। এঘটনায় সহকারী গোলজার বদলি হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছে শিক্ষা অফিসার মর্জিনা খাতুন।
সাঁথিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী গোলজার হোসেন ও শিক্ষা কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুনের দুর্নীতির সংবাদ দৈনিক আমাদের সময়ে প্রকাশিত হলে উচ্চমান সহকারী গোলজার হোসেন কে ২৫ আগস্ট সাঁথিয়া থেকে শাস্তিমূলক জয়পুরহাটে বদলি করেন রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মনসুর রহমান জানান, তার (মর্জিনা খাতুন) বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ। তার মতো কর্মকর্তা তিনি তার চাকরি জীবনে দেখেননি। মর্জিনা খাতুনকে তার সব অনিয়মের জন্য কয়েক দফা মৌখিক সতর্কসহ লিখিত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। সর্বশেষ গত ৬ আগস্ট মর্জিনা খাতুনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করে মহাপরিচালকের অফিসে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
প্রকাশ গত ২১ আগস্ট দৈনিক আমাদের সময় ৭ পৃষ্ঠায় “সাঁথিয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল”-ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস ইউএিনওর” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।