দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি নয়ন জানান ॥ দিনাজপুরের হাউজিং এষ্টেটের একটি বাড়ী বরাদ্দ দেয়া নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর ডিভিশন অফিস।
একই কোয়াটার বরাদ্দ পাওয়ার দাবীদার দাঁড়িয়েছে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও একজন প্রবাসী নারী। এতে করে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেননা কোয়াটারটি কাকে বরাদ্দ দিবেন।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর ডিভিশন অফিস সুত্রে জানা যায়, হাউজিং এষ্টেটের পুরাতন ৬ নং ব্লকের ই/৬ নাম্বার বাড়ীটি ১৯৯০ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা বশির উদ্দিন মোল্লা ২৩৬৮ নং স্বারকে বরাদ্দ পান। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে জানতেননা। যখন জানতে পারেন, তখন তিনি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর ডিভিশন অফিসে যোগাযোগ করে জানতে পারেন তার নামে বরাদ্দকৃত বাড়ীটি প্রবাসী নারী ফেরদৌসী বেগমকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই ঘটনা জানতে পেরে মুক্তিযোদ্ধা বশির উদ্দিন মোল্লা বাড়ীটি বরাদ্দ তার নামেই বহাল রাখার জন্য চেয়ারম্যান জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বরাবর গত ২ অক্টোবর আবেদন করেন এবং সেই কপি অবগতির জন্য দিনাজপুর ডিভিশন অফিসেও জমা দিয়েছেন।
খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রথমে বাড়ীটি ১৯৯০ সালে মুক্তিযোদ্ধা বশির উদ্দিন মোল্লা বরাদ্দ পান। যা জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইর্ডে উল্লেখ রয়েছে। এরপর একই বাড়ী প্রবাসী নারী ফেরদৌসী বেগমকে গত ১৬ জুলাই ২০১৪ ইং তারিখের ৬৩ তম বোর্ড সভায় এবং ৩০আগষ্ট ২০১৯ ইং তারিখের ২০১ তম বোর্ড সভায় বরাদ্দ দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা বশির উদ্দিন মোল্লা বিষয়টি জানতে পেরে তার নামে বরাদ্দ বহাল রাখার জন্য চেয়ারম্যান জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছেন। এতে করে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর ডিভিশন অফিস কাকে বরাদ্দ দিবেন তা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে।
এ ব্যাপরে জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা বশির উদ্দিন মোল্লা জানান, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুয়ায়ী পরস্পর ও পরস্পর নির্ভশীল ব্যক্তির নামে একাধীক বাড়ী, প্লট বা ফ্লাট ও দোকান বরাদ্দ পাবেনা। কিন্তু উক্ত বাড়ীটি যে প্রবাসী নারী ফেরদৌসী বেগমকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তার ছেলে মোঃ ফয়সাল রহমানের নামে একই ব্লকের ই/৪ নাম্বার বাড়ী রয়েছে। যাতে ৪ তলা বাড়ী নির্মাণ করা হয়েছে। বাড়ীটি বরাদ্দ নেয়ার সময় ছেলে মোঃ ফয়সাল রহমানের নামে ভূঁয়া ভাবে ১৯৮১ সাল থেকে দখল দেখানো হয়েছে। তখন তার জন্মই হয়নি। কারণ মোঃ ফয়সাল রহমানের জন্ম সনদে তার জন্ম তারিখ উল্লেখ রয়েছে ৪ সেপ্টেম্বর ১৯৮৮ ইং। আবার একই ভাবে ই/৬ নম্বর বাড়ীটি তার মা ফরদৌসী বেগম তার নামে বরাদ্দ পাওয়ার জন্য দালাল হিসেবে পরিচিত ভাই আছাদুল ইসলাম আসলামকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। আমাকে এবং অফিসের ষ্টাফদেরকে মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে কাজ বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি সুষ্ঠ ভাবে তদন্ত করে বাড়ীটি বরাদ্দ প্রদানের ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান।
এ ব্যাপরে জানতে চাইলে আছাদুল ইসলাম আসলাম জানান, বাড়ীটি তার বোন বরাদ্দ পেয়েছে। দিনাজপুর ডিভিশন অফিস টাকা জমা দেয়ার জন্য চিঠিও দিয়েছে। অন্য কার নামে বরাদ্দ হয়েছিল কি না তা আমাদের জানা নেই । আমার ভাগিনার নামে যে বাড়ীটি বরাদ্দ রয়েছে সেটি প্রতিবন্ধি কোটায়। আমর বোন যেন, বাড়ীটি নিতে না পারে সে জন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মোর্শেদ মামুন চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা বশির উদ্দিন মোল্লার চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি কয়েকদিন আগে দায়িত্ব পেয়েছি। এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত জানিনা । কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।