লিপন সরকার ঃ
যারা বিসিএস এর আদলে নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। শিক্ষক নিবন্ধন পরিক্ষা পাস করা মানেই একজন নিয়োগ যোগ্য শিক্ষক, তাই নিবন্ধিত শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া এনটিআরসিএ এর কর্তব্য কারণ ২০০৫ইং সালের আইনের ৩, ৮(ক)(খ), ও ১০(২) এর ঘ অনুযায়ী নিবন্ধিত নিয়োগ যোগ্য শিক্ষক হিসেবে প্রত্যয়ন ও সনদ প্রদান করেছেন এনটিআরসিএ। সনদে লেখা আছে eligible to appointed any where in Bangladesh তারপরেও এনটিআরসিএ একটি নোটিশের মাধ্যমে নিবন্ধনজাতির উপর সংবিধানের ২৭,২৮,২৯ ধারা লঙ্ঘন করে উপজেলা কোটা স্থাপনের মাধ্যমে মেধাকে গলা টিপে হত্যা করে ২০১৬ সালে। মেধাতালিকায় প্রথম হয়েও নিয়োগ পাইনি উপজেলা কোটার কারনে, তাই বাধ্য হয়ে মহামান্য আদলতের দারস্থ হয় নিবন্ধনধারীদের নেতা এস এম আমজাদ হোসেন। এস এম আমজাদ হোসেন বলেন, “এনটিআরসিএ” এর অস্বাভাবিক দুর্নীতি ও হ-য-ব-র-ল নিয়োগ পদ্ধতি রোধ করতে গত ২৭/১১/২০১৬ ইং তারিখে গঠিত হয়েছিল নিবন্ধিত শিক্ষকদের অধিকার আদায় কমিটি যার আহ্বায়ক ও সমন্বয়কারী ছিলাম আমি এস এম আমজাদ হোসেন। নিবন্ধিত শিক্ষকমন্ডলীদের নিয়ে আমি এনটিআরসিএ এর জাল সনদ বিক্রি, হ-য-ব-র-ল নিয়োগ প্রক্রিয়া, উপজেলা কোটা, অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য প্রতিরোধ করতে এবং বৈধ সনদধারীদের নিয়োগ আদায় করতে সমগ্র বাংলাদেশে জনসভা, মানববন্ধন সহ যাবতীয় আন্দোলন গড়ে তুলি। এর প্রেক্ষিতে এনটিআরসিএ এর হটকারীতার বিপক্ষে মহামান্য হাইকোর্টে একে একে ১৬৬টি রিট দাখিল হয় । গত ২০১৭ ইং সালের ১৪ ডিসেম্বর মহামান্য হাইকোর্ট দীর্ঘ শুনানির পর সাতটি নির্দেশনাসহ এক যুগান্তকারী রায় প্রধান করেন। উক্ত রায়ে উপজেলা কোটা বাতিলসহ সনদের মেয়াদ হয় সনদধারীদের নিয়োগের পূর্ব পর্যন্ত। কিন্তু এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান এস এম আশফাক সাহেব উক্ত রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সনদধারীদের উপর বয়সসীমা চাপিয়ে দেন এবং কোর্ট বন্ধ থাকা অবস্থায় ৪০০০০ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ২ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে, এ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে না পেরে আবারো ৩৫ উর্দ্ধো নিয়োগ বঞ্চিত নিবন্ধিত শিক্ষক কেন্দ্রীয় ফোরামের নেতৃত্বে মহামান্য হাইকোর্টে রিট দাখিল হয়। মহামান্য হাইকোর্ট রিট পিটিশনারদের আবেদন দ্রুত গ্রহণ করে নিয়োগ দেবার নির্দেশ দিয়ে ডিরেকশন দেন। রিট নং ১৫৭৬৭/২০১৮, ৫৫২/১৯, ১৩৯/১৯ সহ প্রায় ২১ টি রিট দাখিল হয়। এর মধ্যে নিবন্ধনজাতির কর্নধার ও সভাপতি এস এম আমজাদ হোসেন সাহেবের রীট ১৫৭৬৭/১৮, ১৩৯/১৯ ও আব্দুর রউপের একটি রিট সহ আটটি রিটের ডিরেকশনের বিপক্ষে আপীল করে এনটিআরসিএ, আপীল বিভাগ ১৩৯/১৯ রিটটিকে নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে প্রেরণ করেন, আর ১৫৭৬৭/১৮ নং রিটটির হাইকোর্টে ডিরেকশন বহালসহ নিয়োগের নির্দেশনা দিয়ে নিষ্পত্তি করেন মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ ছয়জন বিচারপতি মহোদয়গণ। মহামান্য হাইকোর্ট দীর্ঘ শুনানির পর গত ২/১/২০১৯ ইং তারিখে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে আবেদন গ্রহণ করে চাকুরি দেবার জন্য ডিরেকশন দেন ।তারপরেও এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত আক্রশ থেকে আবেদন গ্রহণ না করে গোপনে চেম্বার কোর্ট থেকে ১মাসের স্টে নেন। আমরা যখন অবগত হয়েছি তখন সাথে সাথে প্রধানবিচারপতির কোর্টে ফাইল করি এবং মহামান্য প্রধানবিচারপতিসহ ৬জন বিচারপতি স্টে ভ্যাকেট করেন এবং হাইকোর্টের রায় বহাল ও ন্যায়সঙ্গত বলেন এবং বাস্তবায়নে করতে নির্দেশ দিয়ে আমাদের জীবন রক্ষা করেছেন। কিন্তু এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান এতটা ক্ষমতাশালী উনি মহামান্য প্রধানবিচারপতির রায়কেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। আমাদের সুযোগ আজ পর্যন্ত দেয়নি বরং আমাকে মামলার হুমকিধামকি দিয়ে কোনঠাসা করার হীন চেষ্টা করেছেন এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান ও যুগ্মসচিব। উক্ত রায়ে আইনের কাছে হেরে গেলেন এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান কোর্টের রায় ও ডিরেকশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ৩৫ উর্দ্ধোদের আবেদন গ্রহন করেননি বরং অনেক হুমকিধামকি দিয়ে সভাপতি এস এম আমজাদ হোসেনকে থামিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছেন বারংবার। আদালতের ডিরেকশন অমান্য করতে সামান্য দিদ্বাও করেননি এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান। ১৩৯/২০১৯ নং রিটটি ২৫নং কোর্টে দীর্ঘ শুনানির পর ২২মে ২০১৯ ইং তারিখে ৩৫ উর্দ্ধোদের আবেদন গ্রহন করার নির্দেশ দেন। এ রায়েও আবারো এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান হেরে যান। কিন্তু ১৩৯/১৯ রিটের রায়কেও আপিল করার আবেদন করেছে এনটিআরসিএ, পক্ষান্তরে মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের ডিরেকশনের উপর রিভিউ করতে উঠে পরে লেগেছে এনটিআরসিএ। সর্বোপরি আদালত রায় দেবার পরেও কোন স্বার্থে এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান ৩৫ উর্দ্ধোদেরকে বঞ্চিত করছে বারংবার। উনার কাছে কি মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের ডিরেকশনের কোনো মুল্য নাই? নাকি উনি আইনের উর্দ্ধে? নাকি উনি নিজের স্বার্থে শিক্ষার পরিবেশকে চিরতরে বিনষ্ট করতে চাচ্ছেন? এ সকল প্রশ্ন এখন সকল নিবন্ধনধারীর মুখে মুখে। তাছাড়াও ৩৫ উর্দ্ধো নিয়োগ বঞ্চিত নিবন্ধিত শিক্ষক কেন্দ্রীয় ফোরামের সভাপতি এস এম আমজাদ হোসেন ও সাধারন সম্পাদক আব্দুর রউপ তিতুমীরসহ বেশ কিছু নিবন্ধনধারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে স্মারকলিপি প্রধান করেন। তাছাড়া মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহোদয়কে বার বার এ বিষয়টি অবহিত করেছেন নিবন্ধনজাতির কর্নধার এস এম আমজাদ হোসেন।