মোঃ হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে নির্মিত আশ্রয়ণ কেন্দ্র, গুচ্ছ গ্রাম এবং বন্যা সেল্টারগুলো কোন উপকারে আসছে না চরবাসীর। দীর্ঘদিন থেকে মেরামত, সংস্কার, পুর্ণনির্মাণ, মাটি ভরাট, পরিচর্যা, বসবাস না করা ও পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ না করার কারণে বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বন্যার ¯্রােতে এবং ভাঙনে বেশ কয়েকটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র ভেঙে এবং নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেলেও আজও তা মেরামত করা হয়নি। তাছাড়াও বেশিভাগ আশ্রয়ণ কেন্দ্র এবং গুচ্ছ গ্রামের ঘরগুলো প্রভাবশালীর দখলে তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে।
উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী বর্তমানে একাধিক শাখা ও নালা নদীতে রুপ নিয়েছে। যার কারণে ভাঙনের তীব্রতা দিন দিন বেড়েই চলছে। পানির গতিপথ একমুখী না হওয়ায় চরাঞ্চলে বসবাসকারি পরিবারগুলো প্রতিনিয়ত ভাঙনের শিকার হচ্ছে। সেই সাথে ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলিন হচ্ছে বসতবাড়ি, আবাদি জামি এবং বিভিন্ন স্থাপনা।
উপজেলায় ১৩টি আশ্রয়ণকেন্দ্র, ১০টি গুচ্ছ গ্রাম ও ৩টি বন্যা সেল্টার রয়েছে। এর বেশিভাগ আশ্রয়ণ কেন্দ্র ও গুচ্ছগ্রাম গুলো বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। চলতি বছরের স্বরণকালের বন্যায় চরাঞ্চলের আশ্রয়ণ কেন্দ্র এবং গুচ্ছ গ্রাম গুলোর ভিতরে ৩ হতে ৪ ফিট পর্যন্ত পানি প্রবেশ করেছিল। যার কারণে সেখানে বন্যার সময় অবস্থান করতে পারেনি বানভাসিরা। অভিজ্ঞ মহলের দাবি অপরিকল্পিতভাবে এবং নিচু এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করায় ব্যবহার উপযোগি নয়। কাপাসিয়া ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্প শুধু নামে রয়েছে কাজে নাই। আশ্রয়ণ কেন্দ্রের কক্ষগুলো ব্যবহারের যোগ্য নয়। তাছাড়া বেশিভাগ আশ্রয়ণ কেন্দ্রের কক্ষগুলো বর্তমানে তালাবদ্ধ। তিনি বলেন, চরের কিছু সংখ্যক অসাধু ব্যক্তি জোর পূর্বক ঘর বরাদ্দ নিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখে অন্যত্র বসবাস করে। বন্যার সময় ত্রাণ নেওয়ার জন্য ঘরে এসে বসবাস শুরু করে। দীর্ঘদিন ঘরগুলো ব্যবহার না করায় দিন দিন ব্যবহারের যোগ্য হয়ে পড়ছে।
হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান, আমার ইউনিয়নে এনর্জিও সংস্থা কর্তৃক নির্মিত একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র ২০১৫ সালের বন্যার ¯্রােতে ভেঙে গেছে। কিন্তু আজও তা এনর্জিও ও জিও সংস্থা আশ্রয়ণটি মেরামত ও সংস্কার করেনি। তাছাড়া সরকারিভাবে নির্মিত আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলো সংস্কার না করায় দিন-দিন ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় আশ্রয়ণ কেন্দ্রের সংখ্যা অনেক কম।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নবী সরকার জানান, পূর্বে যে সব আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিল তা দিন-দিন ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে মজিব কেল্লা নির্মাণের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে কমপক্ষে ১৮টি মজিব কেল্লা নির্মাণ করা একান্ত প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলী জানান, উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে আধুনিক প্রযুক্তির আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে।