ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কোনো জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দিশত জন্মবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব), মুখ্য সচিব মলয় দে, স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়সহ মন্ত্রী ও সচিবরা।
এনআরসি আতঙ্কে এ রাজ্যে ইতোমধ্যেই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে এনআরসি নিয়ে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ তুলে রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করে তিনি জানিয়েছিলেন, নিজেদের মূল্যবান জীবন নষ্ট করবেন না। মঙ্গলবার সেই এনআরসি ইস্যুতে নিজের অবস্থান ফের একবার স্পষ্ট করলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান।
বিজেপিকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ ভয় দেখিয়ে বলছে ১৯৭১ সালের সনদ চাই, তবেই নাকি এনআরসি হবে। আমি বলছি কোনো এনআরসি হবে না। এনআরসি নিয়ে কেউ কোনো চিন্তা করবেন না। ১০ বছর পর পর জনগণনা হয়। এটা সারা জীবন ধরে হয়। দেশে কত ছোট বাচ্চারা আছে বা অল্প বয়সি যুবক-যুবতি আছে, কতজন শিক্ষিত আছেন, কতজন চাষী, কতজন শ্রমিক আছেন-এই বিষয়গুলো জানার জন্যই এই জনগণনা করা হয়। আপনাদের চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। মনে রাখবেন, আপনারা যারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলায় আছেন, বাংলা আপনার ঘরবাড়ি, সংসার। কোন মানুষকে বাংলা থেকে কেউ তাড়িয়ে দিতে পারবে না। আমি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে দাঁড়িয়ে থেকে বলে যাচ্ছি, এ রাজ্যে কোন এনআরসি হবে না। সব মানুষ ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন।
মমতার মন্তব্য, কষ্ট করে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশের জন্য বলিদান করেছেন বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু। সেই স্বাধীন দেশের মানুষকে বলা হচ্ছে পরাধীন করে দেবে। এটা কখনো হতে পারে না। এটা মিথ্যা অপপ্রচার, একটা চক্রান্ত- এটা বিশ্বাস করবেন না।
ঐক্যের বার্তা দিয়ে মমতা এদিন বলেন, ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ বা জৈন-যাই হই না কেন আমরা সবাই এক। একটা ফুল দিয়ে একটা মালা গাঁথা যায় না। অনেকগুলো ফুল দিয়ে একটা মালা গাঁথতে হয়। আর যে মালাতে সব ধরনের ফুল থাকে মানুষ সেই মালাই গ্রহণ করে। কাঁটার মালা মানুষ পছন্দ করেন না।