মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার ঃ মৌলভীবাজারে নিজ উদ্যাগে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল-ট্যাং ফল ফলিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শেখ মোহাম্মদ নাহিদ নিয়াজ ও অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তারা। ট্যাং ফল এর পাশাপাশি রোপন করেছেন বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছের চারা। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রানালয়ের অধীন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত মৌলভীবাজার কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রতিদিন বৃক্ষপ্রেমী লোকজন এসে এই ফল গাছ দেখে যাচ্ছেন। কিভাবে এটি উৎপাদন করা যায় তা জানতে চেষ্টা করছেন। লতা সদৃশ ট্যাং ফল গাছটি বৃদ্ধি পেতে থাকলে তিনি তা বাউনি দিয়ে তুলে দেন। সেখানে তিনি মাচার ব্যবস্থাও করেছেন যাতে গাছের শাখা প্রশাখা বিস্তৃত হতে পারে। প্রচন্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতে, অতিথি আপ্যায়নে আমরা অনেকেই ট্যাং এর শরবত পান করি। ট্যাং এর গুঁড়া আমরা বাজার থেকে কিনে থাকি। তবে বাস্তবে এই ট্যাং একটি বিদেশি ফলের নাম। সাধারণত এই গাছে সেপ্টেম্বর মাসে ফুল আসে ও ফল ধরে। এক থেকে দেড়মাসের মধ্যে ফল পরিপক্ক হয়ে থাকে। পাকা ফল দেখতে টুক টুকে হলুদ হয়। পাকা ফলের রস ঠান্ডা পানিতে মেশালে হলুদ রঙের সুগন্ধি শরবত তৈরি হয়। পরিমিত পরিমাণ চিনি মিশিয়ে এ শরবত পান করলে প্রচন্ড গরমে স্বস্তি মেলে। সার ও কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। বিদেশ থেকে এ ফলের প্রক্রিয়াজাত গুঁড়া আমদানি করতে আমাদের অনেক খরচ হয়। কিন্তু, বাংলাদশেও এই ফলের চাষ করা যায় এবং পাকা ফলের রস ভক্ষণ করে অতি সহজেই ভিটামিন সি ও লৌহজনিত খাদ্যের অভাব প‚রণ করা যায়। গাছটি লতাজাতীয় বিধায় মাটির ওপর শক্তভাবে দাঁড়াতে পারেনা। দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো জন্মায়। লাউ এর মাচার মতো ব্যবস্থা করে দিলে অতি সহজেই ট্যাং গাছে ফল ধরে। ফল পাকলে হলুদ হয়ে যায়। শুধু রোপণের সময় রাসায়নিক সার ব্যবহার করলেই হয়। পরবর্তীতে আর সার প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না। দেখতে অনেকটা আপেলের মতো গোলাকার ধরনের। লম্বা বোঁটাতে ফলগুলো ঝুলতে থাকে। যা দেখতে বেশ চমৎকার। যখন পাকতে শুরু করে হলুদ বর্ণ ধারণ করে। তখন আর সাদা স্পটগুলোর বর্ণ সাদা থাকে না। পাকা ফলের হলুদ বর্ণের মাঝে ফলগুলোতে তিনটি মোটা দাগ দেখা যায়। ফল কাঁচা অবস্থায় বেশ শক্ত থাকে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শেখ মোহাম্মদ নাহিদ নিয়াজ বলেন- ট্যাং ফলের চাষে তেমন কোন খরচ নেই বিধায় আমাদের দেশে বসতবাড়ির আঙিনায় ট্যাং এর চাষ করা যেতে পারে। গোটা বাংলাদেশেই এ ফলের চাষ করা সম্ভব। বৈজ্ঞানিক উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করে আমরা অতি সহজেই এ ফলের রস তৈরি করতে পারি। তাছাড়া এ ফলের প্রক্রিয়াজাত কারখানা চালু হলে দেশের লাখ লাখ লোকের বেকার সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হবে। দেশ সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। আমরা অতি সহজেই ভিটামিন সি, ডি ও আয়রন জাতীয় খনিজের অভাব প‚রণ করতে পারি।