মিয়ানমার থেকে জোর করে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়াটা বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট বোঝা হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং তাদেরকে অবশ্যই নিজভূমে ফিরিয়ে নিতে হবে।
সফররত অষ্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিজ পেইন বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে এলে তিনি একথা বলেন।
আজ থেকে ঢাকায় শুরু হওয়া ৩য় আইওরা সমুদ্র অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি) বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগদানের জন্য তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সফররত অষ্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিজ পেইন বলেছেন, তার দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি জোড়ালো সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
অষ্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্বৃতি দিয়ে প্রেস সচিব জানান, আমরা চাই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকরা তাদের নিজ দেশে ফিরে যাক।
মেরিজ পেইন প্রায় ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুয়সী প্রশংসা করেন।
অষ্ট্রেলিয়া মানবিক দিক বিবেচনায় আগামীতে আরো সহযোগিতা করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এই ইস্যুটির সংস্পর্শে থাকতে চাই।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে এসব জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রেস সচিব জানান, শেখ হাসিনা বলেছেন , আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপ করেছি এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছি কিন্তু চুক্তির বাস্তবায়ন হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এটা আমাদের জন্য একটি বড় বোঝা। ইতোমধ্যেই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ নতুন শিশু জন্মলাভ করেছে।
শেখ হাসিনা অষ্ট্রেলীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, তাঁর সরকার রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য একটি দ্বীপের উন্নয়ন সাধন করেছে।
অষ্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের ভুয়সী প্রশংসা করেন।
ক্রিকেট প্রসঙ্গে কথা হলে মেরিজ পেইন, যিনি কিনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতই এই জনপ্রিয় খেলার একজন ভক্ত, তিনি বলেন, তাঁরা চান অস্ট্রেলীয় জাতীয় ক্রিকেট দল আগামী বছর বাংলাদেশ সফর করুক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড.একে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলীয় হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ৩য় আইওরা সমুদ্র অর্থনীতি (ব্লু-ইকোনমি) বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগদানে আগত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদলের প্রধানগণ একই হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
তাঁদেরকে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানান বলেও প্রেস সচিব উল্লেখ করেন।