ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে অভিযুক্ত করে এর প্রতিবাদে ঈশ্বরদীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একজন ব্যবসায়ী। সোমবার বিকেলে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও মোল্লা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুরুজ মোল্লা। লিখিত বক্তব্যে সুরুজ মোল্লা বলেন, গত ৩১ আগস্ট ‘দৈনিক সমকাল’ পত্রিকায় ‘সন্ত্রাসীদের হুমকি ঈশ্বরদীতে নিরাপত্তাহীনতায় গার্মেন্টস কর্মকর্তার পরিবার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে আমাকে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যা অত্যান্ত লজ্জা ও দুঃখজনক। প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে ওই সাংবাদিক আমার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ বা আমার বক্তব্য ছাড়াই অত্যন্ত চতুরতার সাথে অভিযোগকারী ফজলুর রহমানের পক্ষ অবলম্বন করে একতরফাভাবে আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে মিথ্যাচার করেছেন। প্রকাশিত সংবাদে হুমকি প্রদান, বাড়িতে হামলা, বাড়ি নির্মাণ কাজে বাধা ও অস্ত্র ব্যবসাসহ আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আমি সমাজে সুনামের সাথে বসবাস করে আসছি। আমার নামে কোথাও কোন অভিযোগ বা দূর্নাম নেই। সৎ ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি স্থানীয় সামাজিক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও গরীব-দুঃখী মানুষকে আমার সাধ্যমত সহযোগীতা করে মহান আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছি। অথচ প্রকাশিত সংবাদে আমাকে অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এসময় ব্যবসায়ী সুরুজ মোল্লা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, আমার এলাকায় খোঁজ-খবর নিয়ে দেখুন সমকালে প্রকাশিত সংবাদের সাথে আমার ব্যক্তি জীবন ও কর্মকান্ডের কোন মিল রয়েছে কি না?
সুরুজ মোল্লা এসময় প্রকৃত ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, অভিযোগকারী ফজলুর রহমান মোল্লাা আমার বাবার চাচাতো ভাই। ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট ফজলুর রহমান আমির মোল্লার ওয়ারিশসূত্রে ফকির মোল্লার ওয়ারিশদের নিকট জমি পাবে এই দাবিতে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার পর চেয়ারম্যান, মেম্বার, আইনজীবি, সাংবাদিক ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট গ্রাম্য সালিশে জমি মাপা হয় এবং বিষয়টি মৌখিকভাবে নিস্পত্তি করা হয়। এ ঘটনার পর হতেই ফজলুর রহমান একের পর এক আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী ও মানহানির চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি তিনি বাড়ি নির্মাণের সময় সামনের রাস্তার উপর একটি পিলার স্থাপন করেন। এতে রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধিতার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি মুলাডুলি ইউপি চেয়ারম্যান মহোদয়কে অবহিত করলে তিনি এটি মিমাংসার জন্য ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজকে দায়িত্ব দেন। তিনি এসে দু’পক্ষের উপস্থিতিতে পিলারটি রাস্তা থেকে সরিয়ে নিতে বলেন। এতে ফজলুর রহমান আমাদের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন এবং আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন এবং আমার ছোট ভাই বিপুল মোল্লাকে অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে চিহিৃত করার অপচেষ্টার সাথে তিনি জড়িত বলে আমরা মনে করি। এই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় আমার বিরুদ্ধে সমকাল পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করা অপচেষ্টা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা কথা সম্বলিত অভিযোগ পত্র সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ী সুরুজ মোল্লা বলেন, দৈনিক সমকাল পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর আমি সাংবাদিক সেলিম সরদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি চাপের মুখে এ সংবাদ প্রকাশ করেছি। ফজলুর রহমান মোল্লা দৈনিক সমকাল পত্রিকার মালিকের একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। ঢাকায় সমকাল অফিসের দুইজন কর্মকর্তা আমাকে ফজলুর রহমানের পক্ষে সংবাদ পাঠানোর জন্য বলেছেন, তাই বাধ্য হয়েই আমি আপনাদের সাথে কথা না বলেই সংবাদ পাঠিয়েছি। সাংবাদিক সেলিম সরদারের সাথে সেই কথপোকথনের রেকর্ড আমার কাছে রয়েছে। সবশেষে তিনি এ ধরনের মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের জন্য সেলিম সরদারকে সমকাল পত্রিকার মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশের আহবান জানান। এসময় ভাই টুটুল মোল্লা, গোলাম রব্বানী, হাসান আলীসহ ব্যবসায়ীর স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।