ঢাকায় গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যাওয়া বগুড়ার গৃহবধূ আনিকা নওশিন সারার মরদেহ দাফনের ৭১ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা থেকে আসা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি টিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার নতুন বাজার এলাকার পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করে।
আনিকা নওশিন সারা সান্তাহার নতুন বাজারের মৃত নজরুল ইসলামের মেয়ে ও মেরিন প্রকৌশলী শাকিল আদনানের স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী। কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের সময় নিহতের স্বজনদের কান্নায় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনিকা নওশিন সারার সঙ্গে আদমদীঘির সান্দিড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মেরিন প্রকৌশলী শাকিল আদনানের ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। তারা সম্পর্কে খালাতো ভাই-বোন। বিয়ের কিছুদিন পর তারা ঢাকার নিউ ইস্কাটন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাদের আরাফাত (৭) ও সাদাত (৪) নামে দুই ছেলে রয়েছে। সম্প্রতি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। গত ২৬ মে রাতে ঢাকার বাসায় আনিকা নওশিনকে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় স্বজনরা উদ্ধার করে ঢাকার স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পর চিকৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। পরে আইনের আশ্রয় না নিয়েই সেখান থেকে তড়িঘড়ি করে মরদেহ আদমদীঘির সান্তাহার নতুন বাজার এলাকায় দাফন করা হয়।
আনিকা নওশিনের বড় বোন নাজমুন নাহার বাদী হয়ে গত ৩১ জুন ঢাকার হাতিরঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শাকিল আদনানকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি ঢাকায় সিআইডিতে স্থানান্তর করা হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা (উপ-পরিদর্শক) দেলোয়ার হোসাইন মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ও আনিকা নওশিনের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মরদেহ উত্তোলনের আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আনিকা নওশিনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আদেশ দেন। এরপর মঙ্গলবার বগুড়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের উপস্থিতিতে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসাইন জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এটি হত্যা না আত্মহত্যা সেটি জানা যাবে।