নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামে স্থানীয় মোশাররফ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ মানুষ। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় জমি দখল, মাছ, ফসল লুটসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। মোশাররফ বাহিনী। তবে এ নিয়ে ভয়ে কেউ মুখ খুলে না।
সম্প্রতি মোশাররফ বাহিনীর টার্গেটে হয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হক। তিনি স্থানীয় ঈদগাহ মাঠ ও মাদ্রাসার জমি দখল, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পুকুরের মাছ লুট, গাছের ফল লুট, আবাদী জমি দখল আর গরু বিক্রির টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন মোশাররফ বাহিনীর বিরুদ্ধে । রোববার নাটোর ইউনাইটেড প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন তোজাম্মেল হক।
মুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ,মোশাররফ বাহিনী তার বসতবাড়ি ও বাড়ি সংলগ্ন লিচু, সুপারি ও আম বাগান এবং পুকুর জবর দখল করে। পুকুরের মাছ বিক্রি করে বাগানের বিভিন্ন ফলের ক্ষতি করে। তার(তোজাম্মেল) আপন ভাতিজা মুকুল গরু বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পথে তারা তাকে আটকিয়ে টাকা কেড়ে নেয়। এসময় তারা মুকুলকে বস্তায় পুরতে থাকলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাকে রক্ষা করে। শুধু তাই নয়, তার(তোজাম্মেলের)আপন ভাই মোহাম্মদ আলীর ২ বিঘা সম্পত্তি তারা দখলে নিয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন জানান, মোবারক আলীর ছেলে মোশাররফ ও ওয়াকিল নিজেদের একটি বাহিনী তৈরি করে দীর্ঘদিন থেকেই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। মোশাররফ একই এলাকার জব্বার আলীর মেয়েকে ধর্ষনের দায়ে একবার জেল খেটে বের হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ওই বাহিনী একই এলাকার মোহর আলীর বাড়িতে ভাংচুর,লুটপাট,পুকুরের মাছ বিক্রি ও আবাদি জমি দখল করে। মোশাররফের ভাই ওয়াকিল জালিয়াতির মাধ্যমে হাইকোর্টের আদেশ তৈরী করে মোহর আলীর পুকুর ও সম্পত্তি দখলে নেয়। এব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে মোহর আলীর মামলা এখন বিচারাধীন।
স্থানীয় নওপাড়া বগুড়াপাড়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান জানান, মোশাররফ বাহিনী ঈদগাহ মাঠের এক অংশ দখলে নিয়েছে। এতে আসন্ন ঈদের জামাতে নামায পড়া নিয়ে মুসল্লিরা রয়েছে বেকায়দায়। শুধু তাই নয়, এলাকার জনৈক হাকিম একটি মাদ্রাসা করার জন্য ৪ শতক জমি দান করলে সে জমিতেও মোশাররফ বাহিনী তাদের অনুসারী একজনকে বাড়ি করিয়ে দিয়েছে। মোশাররফ প্রভাবশালী হওয়ায় তারা কোথাও বিচার পাচ্ছেন না।
তবে অভিযুক্ত মোশাররফ হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে সাজানো ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে বলেন, তোজাম্মেলের এক ছেলে মৌলভিবাজারের ওসি বিধায় তাদের অত্যাচারেই তারাই অতিষ্ট। সম্প্রতি তোজাম্মেল অনুসারীরা তানিয়া পারভিন তানজিলা নামে তার এক বোন ও অপর দুই ভাইকে মারপিট করেছে। তারা এখন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঈদগাহ এলাকায় তাদের সমিল রয়েছে। ওই সমিলটিও তোজাম্মেল অনুসারীদের কারণে এক মাস ধরে তালাবদ্ধ। আর মাদ্রাসার জায়গার ব্যাপারে এলাকায় মিটিং হয়েছে। খুব শিঘ্রই মাদ্রাসার জমি ফিরিয়ে দেবে ওখানে বসবাসকারী-এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে এলাকার মিটিংয়ে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মোজাহারুল ইসলাম জানান, উভয়পক্ষই দীর্ঘদিন থেকে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাদমান। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।