ঢাকা থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকায় হেলিকপ্টার ভাড়া করে লালমনিরহাটে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ দিতে আসেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও লালমনিরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য জিএম কাদের। আপাত দৃষ্টিতে বিষয়টি প্রশংসিত মনে হলেও বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।
এত টাকা খরচ করে এসে তিনি পরিবার প্রতি ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করেছেন মাত্র ১০ কেজি করে চাল। মাত্র এক লাখ টাকার ত্রাণের চাল বিতরণে এত টাকা পরিবহন খরচ করাতেই মূলত এ সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কাজিচওড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হেলিকপ্টারে পৌঁছান জিএম কাদের এমপি। এ হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য মোতায়েন করা হয় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল।
পরে লালমনিরহাটের রাজপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৫০০ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ শেষে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন এমপি। তবে ত্রাণ পাওয়া পরিবারগুলোর অভিযোগ ১০ কেজি চালের পরিবর্তে তারা চাল পেয়েছেন মাত্র ৮ থেকে ৯ কেজি।
ত্রাণ পাওয়া জোবেদ আলী (৩৭) বলেন, ১০ কেজি চালের জন্য সারা দিন ব্যয় করেছি। চাল পেলাম মাত্র ৮ কেজি। প্রতি প্যাকেটে ২ থেকে ৩ কেজি চাল কম।
স্থানীয়রা জানান, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের পর দুই দফার বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েন প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। সরকারি, বেসরকারি, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করলেও এলাকায় আসেননি লালমনিরহাট সদর আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিস্তা চরাঞ্চলের হযরত আলী (৫০) বলেন, ভোটের পর জিএম কাদেরের দেখা পাইনি। ত্রাণ দিতেও আসলেন অনেক দেরিতে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ ক’জন জাপা নেতা জানান, জাপার চেয়ারম্যান পদ নিয়ে দ্বন্দ্বের রেশ কাটাতেই তিনি তড়িঘড়ি করে বন্যার শেষ মুহূর্তে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেন।
জিএম কাদেরকে বহনকারী মেঘনা এভিয়েশনের পাইলট ক্যাপ্টেন ইসলাম ও রেজা জানান, ঘণ্টা প্রতি লাখ টাকা এবং অপেক্ষমানের জন্য ঘণ্টা প্রতি ৫ হাজার টাকা খরচে হেলিকপ্টার ভাড়া ধরা হবে। সকাল ৯টায় ঢাকা ছেড়ে এসে জিএম কাদের পুনরায় ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন বিকেল সোয়া ৩টায়। সে হিসাবে ঢাকায় পৌঁছানোর পর পুরো খরচ নির্ধারণ করা হবে।
লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক এসকে খাঁজা মঈনুউদ্দিন বলেন, বিতরণের জন্য চাল দ্রুত প্যাকেট করা হয়েছে। সে কারণে চালের ওজন কম হতে পারে।