ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সম্সাপ্ররণের জন্য বাংলাদেশের কাছে ভূখন্ড চেয়েছে ভারত। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সীমান্তে এই ভূখন্ড চাওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন যে, সরকার এখনো এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। সাউথ এশিয়ান মনিটরের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কাছ থেকে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা নেয়া ভারত গত এক বছর ধরে বেশ কিছু বৈঠকে ওই প্রস্তাব দিয়েছে। ২০১৮ সালের ৭ আগস্ট মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দর নামকরণ করা হয় আগরতলা বিমানবন্দরের। বিমানবন্দরটি স¤প্রসারণের জন্য কীভাবে বাংলাদেশের জমি দেয়া যায় তা খতিয়ে দেখতে গত অক্টোবরে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
ভারত কী পরিমাণ ভূমি চেয়েছে তা প্রকাশ করতে কোন কর্মকর্তা রাজি হননি। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমান বিমানবন্দর ও এর রানওয়ে বাংলাদেশের আখাউড়ার চানপুর সীমান্ত থেকে এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে অবস্থিত।
জানা গেছে, কলকাতা থেকে গোয়াহাটিগামি বিমানগুলোকে অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য বাংলাদেশের আকাশসীমা ব্যবহার করতে হয়। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ভারতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র ও বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভারত প্রথম এই প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন সচিব মহিবুল হক বলেন, আমাদের কাছে বিষয়টি পেশ করা হলে আমরা আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিতে বলি। ২০১৮ সালের অক্টোবরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে উপস্থিত দুই সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, এক সেনা কর্মকর্তা ভারতের সঙ্গে ভূখন্ড ভাগাভাগির বিস্তারিত নিরাপত্তা সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।
ভূখন্ড প্রদান করা হলে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সমস্যা হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ ব্যাপারে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট লোকেরা বলতে পারবে না। তবে আমি বিষয়টি বড় আঙ্গিকে দেখি এবং বাণিজ্য ও সচলতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করি। তিনি আরো বলেন, অনেক দেশে আন্তঃসীমান্ত বিমানবন্দর রয়েছে। অনেক দেশ একই বিমানবন্দর ব্যবহার করে।
এদিকে, অক্টোবরের বৈঠকে অংশ নেয়া দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, ভারতের সঙ্গে ভূখণ্ড শেয়ার করা সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে সামরিক কর্মকর্তারা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। কর্মকর্তারা বলেন, বিমানবন্দরটি কিভাবে পরিচালিত হবে, জমি ইজারা দেয়া হবে কি না ও জমি দিতে চাইলে সরকারকে কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে এসব বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে আগরতলা বিমানবন্দরের নাম পাল্টে মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দর করা হয়। আগামী সপ্তাহে ভারত সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। ধারণা করা হচ্ছে, সেসময় এ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হবে।