ইয়ানূর রহমান : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবায় হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। প্রতিদিন রোগী বেড়ে চলার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ওয়ার্ডে জায়গার তুলনায় রোগীর সংখ্যা কয়েকগুন বেশি হওয়ায় অনেকের স্থান হয়েছে বাইরের মেঝেতে। এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের আলাদা করে রাখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু কর্ণার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ লিটু জানান, রোগীর চাপ থাকলেও চিকিৎসক সেবিকা ন্যাশনাল গাইড লাইন মেনে চিকিৎসাসেবা প্রদান করছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরে চাহিদাপত্র দিয়েও ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য ডিভাইস সরবরাহ না পেয়ে হতাশার মধ্যে রয়েছেন। ডেঙ্গু পরীক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ডিভাইস সংগ্রহের জন্য সমাজ সেবকদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ১৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদিন ছাড়পত্র নিয়ে ফিরেছেন ৭ জন। বর্তমানে ৫১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগে মোট ২৩ জন ডেঙ্গু রোগী এই হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কোনো রোগী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানান, প্রতিদিন একাধিক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় রোগীর চাপ বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। কিন্তু সাধারণ রোগীদের সাথে তাদের রেখে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে জায়গা সংকটের কারণে। ওয়ার্ডে কোনো জায়গা নেই। তাই রোগীরা বাইরের মেঝেতেও শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীদের সুবিধার্থে ডেঙ্গু কর্ণার তৈরির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, যশোর সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে বুধবার ডেঙ্গু জ্বর পরীক্ষার জন্য ডিভাইস এনএস-১ দেয়া হয়েছিলো ৪০টি। আর বৃহস্পতিবার দেয়া হয়েছে আরো ৪০টি। দুইদিনে ৫১ জন রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৯টি ডিভাইস রিজার্ভে রয়েছে। যে হারে রোগীরা ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে আসছেন শনিবার সকালেই রিজার্ভে থাকা ডিভাইস এনএস-১ শেষ হয়ে যাবে। বিষয়টি নিয়ে তিনি বিপাকে রয়েছেন।
তত্ত্বাবধায়ক লিটু আরো জানান, সংকট হবে বুঝতে পেরেই গত পরশু ডেঙ্গুজ্বর পরীক্ষার ডিভাইসের পত্র নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরে যাওয়া হয়েছিলো। কিন্তু ডিভাইস শেষ হয়ে গেছে বলে তাদেরকে জানানো হয়েছে। পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে তিনি এখন কয়েকজন সমাজ সেবকের কাছে সহায়তা হিসেবে ডিভাইস এনএস-১ চেয়েছেন। তারা দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। এ সংকটকে পুঁজি করে বাজারে দেড়শ টাকার প্রতিটি ডিভাইস এনএস-১ বর্তমানে বিক্রি করা হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।
যশোরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ইমদাদুল হক রাজু জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য ডিভাইস এনএস-১ সংকট দেখা দিয়েছে। এখন তাদের রিজার্ভে রয়েছে মাত্র ২০টি ডিভাইস এনএস-১। সংকট কাটাতে বিভিন্ন দপ্তরে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে ৷