ইয়ানূর রহমান : অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সুযোগ না দেয়ায় সাইফুল ইসলাম নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধীকে মারপিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে যশোর কোতয়ালি থানার পুলিশ কনস্টেবল রায়হানের (কং নম্বর-১০৮৩) বিরুদ্ধে। তবে সাইফুল ইসলামও একজন মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি শহরের ষষ্টিতলা বিপি রোডের মৃত শফি মিয়ার ছেলে।
সাইফুল ইসলামের অভিযোগ, তিনি ব্যবসা করেন। গত ২৭ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে কোতয়ালি থানার পুলিশ কনস্টেবল রায়হান একটি অপরিচিত মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। তার ঘরে ওই মেয়ের সাথে সময় কাটাতে চাইলে তিনি রাজি হননি। সে সময় তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে থানার ওসি (অপারেশনস) সেখ তাসমীম আলম, সেকেন্ড অফিসার এসআই আমিরুজ্জামান, কনস্টেবল মাহমুদ ও রায়হান তার বাড়িতে গিয়ে একজন আসামির বাড়ির অবস্থান জানতে চান। তিনি তাদের সহযোগিতা করার পর অফিসাররা সেদিকে চলে যান। কিন্তু পেছনে থাকা কনস্টেবল রায়হান তার ঘরে গিয়ে তাকে চড় থাপ্পড়, কিল ঘুষি ও লাথি মারেন। তিনি মাটিতে পরে যান। এ বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিক অফিসারদের কাছে নালিশ করেন। কিন্তু অফিসাররা ওই সময় কোনো বিচার করেননি। ফলে সাইফুল ইসলাম জীবনের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেলের কাছে বুধবার একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিষয়টি দেখার জন্য এবং খোঁজখবর নেয়ার জন্য কোতয়ালি থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
জানাগেছে, কনস্টেবল রায়হান কোতয়ালি থানার একটি সাদা পোশাকের টিমের সদস্য ছিলেন। সেসময় থেকে তিনি সাধারণ মানুষ অথবা অন্য কোনো অপরাধীর সাথে খুবই বাজে আচরণ করতেন। যখন তখন মারপিট, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। শহরের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন যা এখনও চলছে। নিরাপরাধ মানুষের পকেটে ইয়াবা, গাঁজা ঢুকিয়ে দিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে টাকা আদায় করার বহু অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। সেসময় টাকা আদায়ে সাদা পোশাকের টিম এতই মত্ত ছিলো যে, টিমের অফিসাররা তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতেন না। মাদকদ্রব্য উদ্ধার হলে তা অপর মাদক বিক্রেতাদের কাছে তিনি বিক্রি করতেন। সেই সময় থেকে চিহ্নিত কিছু মাদক বিক্রেতার সাথে তার যোগাযোগ গড়ে উঠে। শুধু টাকা আদায় না নিয়মিত মাদক সেবন করে থাকেন কনস্টেবল রায়হান।
সূত্রটি জানায়, রায়হান এখনও পর্যন্ত মোটরসাইকেল নিয়ে মাদক বিক্রেতাদের কাছে গিয়ে আটকের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে থাকে। অভিযোগকারী সাইফুল ইসলামও মাদক বিক্রি করতেন। বর্তমানে তিনি তা বাদ দিয়েছেন। ফলে আগের সম্পর্কের জায়গায় থেকে সাইফুলের বাড়িতে একজন অপরিচিত নারীকে নিয়ে গিয়েছিলেন কনস্টেবল রায়হান।
এ বিষয়ে কনস্টেবল রায়হান বলেন, সাইফুলের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কিছু দিন আগে এক রিকসা চালক সোনার বিস্কুট দেখিয়ে এক নারীর কাছ থেকে সোনার গহনা নিয়ে মুড়লী জোড়া মন্দির এলাকার দিকে চলে যায়। তার খোঁজখবর নেয়ার জন্য তিনি সাইফুলের বাড়িতে যান। সে সময় তার স্ত্রী পুলিশের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। তখনই একজন অপরিচিত নারীকে সেখানে দেখি। সেই নারীর গতিবিধি ভালো মনে হয়নি। সাইফুল খারাপ মেয়েদের নিজের কাছে রাখে। সে এখনও মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে কনস্টেবল রায়হান উল্টো অভিযোগ করেন ৷