সিয়াম সাহারিয়া,পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা মডেল রিসোর্স সেন্টার এর মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের মডেল কেয়ারটেকার মো. ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে নানা প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে নওগাঁ জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত পূর্বক আইনত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন অভিযোগকারী কবি কাজী নজরুল ইসলাম গ্রন্থাগারের পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম স্বপন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওমর ফারুক তাঁর দায়িত্ব পালন কালে নিয়মনীতি উপক্ষো করে ৭৫ জন শিক্ষকের কাছ থেকে ১২শ টাকা করে মোট ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। ওই টাকার মধ্যে কমদামি একটি কম্পিউটার সেট ক্রয় করে বাঁকি টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৭ সালে উপজেলা মডেল রিসোর্স সেন্টারটিকে মডার্ণ হারবাল কোম্পানির সেলস অফিসে পরিণত করেন ও প্রত্যেক শিক্ষকদের ওই কোম্পানির নি¤œমানের অপ্রয়োজনীয় প্রায় ১২শ টাকার বিভিন্ন মালামাল কিনতে বাধ্য করান। উল্লেখ্য যে, গত ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মডার্ণ হারবাল কোম্পানির ব্যবসা ও উন্নয়ন সভার আয়োজন করেন। শুধু তাই নয়, প্রকল্পেরে স্টোর রুম ও গেস্ট হাউজ হিসেবে ৪হাজার টাকায় ভাড়া নেওয়া ওই স্থানে মডার্ণ হারবাল কোম্পানির গুদাম ঘর হিসেবে ব্যবহার করেন ওমর ফারুক। প্রকল্পের নিয়মনীতি উপক্ষো করে মডেল রিসোর্স সেন্টারে একজন পিয়ন রাখেন। যাহার বেতন বাবদ প্রায় ১শ জন শিক্ষকদের নিকট হতে প্রতি মাসে প্রায় ৩৫শ টাকা চাঁদা আদায় করেন ও ওই পিয়নকে প্রতি মাসে ২হাজার টাকা সম্মানী বেতন দেন এবং বাঁকি টাকা নিজ পকেটে রাখেন। প্রকল্পের নীতি বহির্ভূতভাবে সপ্তাহের প্রতি শনিবার অফিস করেন না ও পল্লি চিকৎসক হিসেবে রোগি বাহিরে দেখায় অনিয়মিত ভাবে অফিসে আসা-যাওয়া করে থাকেন ওমর ফারুক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষকদের অনেকেই অভিযোগে জানায়, বিভিন্ন কাজে অফিসে এসে ঘুরে যেতে হয় ও দীর্ঘসময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে শিক্ষক নিয়োগে লক্ষ-লক্ষ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের বিনিময়ে চাকুরি প্রদানের অভিযোগ রয়েছে। ১৫ জুলাই ২০১৯ তারিখে উর্ধ্বতন স্যারদের উৎকোচ দেওয়ার নাম ভেঙে ওমর ফারুক প্রকল্পের প্রায় এক’শ জন শিক্ষকদের নিকট হতে ১০হাজার টাকা আদায় করেন। সম্প্রতি, একজন মডেল শিক্ষিকার নিকট হতে পুরস্কার বাবদ ঘুষ গ্রহণ করারও অভিযোগ রয়েছে।
পত্নীতলা উপজেলা মডেল রিসোর্স সেন্টার এর মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের মডেল কেয়ারটেকার মো. ওমর ফারুকের সাথে কথা হলে তিনি উপরোক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানান, জেলা অফিসে এসি লাগানো বাবদ প্রতিজন শিক্ষকদের নিকট ১শ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়েছে প্রত্যেক শিক্ষকদের কাছে। শিক্ষক নিয়োগে কোন বাণিজ্য হয়নি। অভিযোগ করতেই পারেন। প্রকল্প কর্তৃক নিয়োগে নয়, অফিসে পিয়ন রাখা হয়েছে তা শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করেই আমি পিয়ন রেখেছি। শিক্ষকদের চাঁদার টাকাই পিয়নের বেতন দেওয়া হয়। এছাড়াও অন্যান্য অভিযোগের বিষয় এড়িয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পত্নীতলা উপজেলা মডেল কেয়ারটেকার মো. ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।