বিশ্বনাথে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রফিক গ্রেপ্তার

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি ::প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হওয়ার শিকার পর এবার অপহরণ করার অভিযোগে বিশ্বনাথ থানা দায়েরকৃত মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রফিক আলী। সে উপজেলার শাহজিরগাঁও গ্রামের মৃত আরজান আলীর পুত্র। শনিবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রফিক আলীর বিরুদ্ধে অপহরণসহ নানান অভিযোগ এনে তার (রফিক) চাচাত ভাই উপজেলার শাহজিরগাঁও গ্রামের প্রবাসী আরফান উল্লাহ ওরফে গৌছ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী হাওয়ারুন নেছা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় রোববার বিকেল ৬টার দিকে থানার কমপ্লেক্সের সামন থেকে রফিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রফিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নং ২৩ (তাং ২৭.০৭.১৯ইং)। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিকসহ নানান বিষয় নিয়ে রফিক আলী ও হাওয়ারুন নেছা গংদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। উভয় পক্ষের মধ্যে আদালত ও থানায় পাল্টাপাল্টি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। বিগত সময়ে আদালতে হাওয়ারুন নেছার বিরুদ্ধে আদালতে রফিক আলীর দায়ের করা চুরির মামলার জের ধরে শনিবার হাওয়ারুন নেছা রফিক আলীর বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা পিপি বলেন, বাদীর অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় রোববার বিকেলে রফিক আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রফিক আলী বাদী হয়ে গত ২৫ এপ্রিল ‘১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ২ লাখ টাকা’ চুরি করার অভিযোগ এনে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার শিওরখাল গ্রামের আনহার উজা (৪৫), বিশ্বনাথ উপজেলার শাহজিরগাঁও গ্রামের আরফান উল্লাহ ওরফে গৌছ আলীর স্ত্রী হাওয়ারুন নেছা (৪০), কামালপুর গ্রামের মৃত আনজব আলীর পুত্র ছবর আলী (৩৬) ও সুনামগঞ্জে ছাতক উপজেলার বুরাইয়া গ্রামের মৃত ছাদ মিয়ার স্ত্রী জয়দুন বিবি (৪২)’কে অভিযুক্ত করে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত নং ০৩-এ একটি মামলা (সিআর ১২২/২০১৯ ইংরেজী) দায়ের করেন। আদালত বিশ্বনাথ থানাকে মামলাটি তদন্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ১৭ মে বিশ্বনাথ থানার এসআই মিজানুর রহমান আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে ওই ৪ (চার) অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বাদী করা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজান। পরবর্তিতে পুনঃরায় বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হয় এবং বাদীর অভিযোগ মিথ্যা বলে আদালতে আরেকটি প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।আর আদালতে দায়ের করা সিআর ১২২/২০১৯ইং মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য মামলার ৪নং অভিযুক্ত জয়দুন বিবি ও ২নং অভিযুক্ত হাওয়ারুন নেছার নিকট আতœীয় প্রবাসী শেখ মহব্বত আলী কর্তৃক ১৮মে রাতে তাকে (রফিক) প্রাণ নাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ এনে গত ২০মে নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সিলেটের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রফিক আলী। মামলা নং ১১৭/২০১৯ ইংরেজী। মামলায় উপজেলার কামালপুর গ্রামের মৃত আনজব আলীর পুত্র ছবর আলী (৩৫) ও উত্তর দশপাইকা গ্রামের মৃত রাহাত উল্লাহর পুত্র শেখ মহব্বত আলী (৪৮)’কে অভিযুক্ত করা হয়।এরপর গত ২২মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রফিক আলীর উপর হামলার অভিযোগ এনে তিনি (রফিক) বাদী হয়ে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত নং ০৩-এ আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সিআর ১৪৯/২০১৯ ইংরেজী। ওই মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্বনাথ উপজেলার কামালপুর গ্রামের মৃত আনজব আলীর পুত্র ছবর আলী (৩৫), উত্তর দশপাইকা গ্রামের মৃত রাহাত উল্লার পুত্র শেখ মহব্বত আলী (৪৮), বালাগঞ্জ উপজেলার শিওরখাল গ্রামের রফিক আলীর পুত্র আনহার উজা (৪৫), বিশ্বনাথ উপজেলার দক্ষিণ দশপাইকা গ্রামের নছিব উল্লার পুত্র ওহাব আলী (৪০), উত্তর দশপাইকা গ্রামের মৃত খলিল মিয়ার পুত্র শফিক আহমদ পিয়ার (৩৫)’কে।