নওগাঁ সদর উপজেলার হাপানিয়া এলাকায় বয়লার চাতালের বর্জ্য, দুষিত পানি এবং ছাইয়ের প্রভাবে ফসলী জমির ব্যপক ক্ষতি

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ সদর উপজেলার হাপানিয়া বাজার এলাকায় বয়লার চাতালের নির্গত বর্জ্য, ছাই ও নোংরা পানিতে ফসলী জমিতে ফসল উৎপাদন সম্পূর্নভাবে বন্ধ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে এসব বর্জ্য পচা নোংরা পানির দুর্গন্ধে এলাকাবাসীর বসতবাটিতে বাস করা দুরুহ হয়ে পড়েছে।


প্রায় ১৫ বছর ধরে এসব বয়লার চাতালের পার্শ্বে একডালা মৌজার প্রায় ৫০ বিঘা জমির ফসল উৎপাদন ব্যহত হয়ে আসছে। বর্তমান এই ৫০ বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদন সম্পূর্নভাবে বন্ধ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও ফসলের এই ক্ষতির এলাকা পাশ্ববর্তী ডাফাইল মৌজায় ছড়িয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় দুর্গন্ধে গ্রামবাসীদের বসত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।


জানা গেছে হাপানিয়া বাজার সংলগ্ন দক্ষিন পার্শ্বে মেসার্স ফাপরুক রাইচ মিল, মেসার্স নার্গিস এন্ড সন্স চাউল কল, মেসার্স মোল্লা জান মোহাম্মদ চাউল কল এবং মেসার্স শাহিন চাউল কল নামের বয়লার চাতালগুলো দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে।
এসব বয়লারের বর্জ্য, ছাই এবং নোংরাা পানিতে একডালা গ্রামের আবুল কালাম, আহসান হাবীব, মোঃ আলীমুদ্দিন, মোঃ সিরাজ খান, সাদ্দাম হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের প্রায় ৫০ বিঘারও বেশী জমির ফসল উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে। এর প্রতিকার চেয়ে ২০০৪ সালে জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেন।


প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগ বগুড়া’র পত্র নং পরিবেশ/রাবি/অভিযোগ(চাতাল)-৩৯৩১/২০০৪/৩১৭ তারিখ ১০ মার্চ’২০০৪ মোতাবেক অভযুক্ত রাইচমিল গুলো ছাড়পত্রের শর্ত ভঙ্গ করে পরিচালনা করার কারনে বয়লার চাতাল গুলো থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোয়া, ছাই এবং ধান সিদ্ধ পচা পানি দ্বারা আবাসিক এলাকাবাসীদের আবাদী জমির ফসল উৎপাদনে ক্ষতি সাধন এবং বায়ু দুষনসহ সার্বিক পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। ঐ পত্রে ৬০ দিনের মধ্যে রাইচমিল গুলোর পার্শ্বে নিজস্ব জমিতে রিজার্ভার তৈরী করে এসব বর্জ্য ছাই ও পচা পানি সংরক্ষন করে মিল পরিচালনা করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল।
অপরদিকে তদন্ত সাপেক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষে নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের পত্র নং ৭-৭(১)/২০০৩-৩৫/১(২) তারিখ ৭/০১/২০০৪ মোতাবেক একই ধরনের রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছিল। এই রিপোর্টের অনুলিপি পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় অফিসে প্রেরন করা হয়।


এ মরেধ্য ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এসব মিল মালিক জমির ক্ষতি লাঘবের কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। তবে জমির মালিকদের বিক্রি করতে বাধ্য করার মাধ্যমে কিছু জমি ক্রয় করে কেউ কেউ রিজার্ভারের নামে পুকুর কেটে সেখানে মাছ চাষ শুরু করেছেন। জমির মারিকদের যা অবস্থা তাই রয়ে যায়। এসব জমি বর্তমানে পুরোপুরি বন্ধাত্বে রুপ নিয়েছে। বরং পানি বন্ধ করতে গিয়ে মিল মালিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের পুলিশী হয়রানীর শিকার হতে হয়েছে।