নয়ন বন্ড, রিফাত শরীফ ও রিফাত ফরাজী- এরা একসময় পরস্পরের ঘণিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে চলাফেরা করতেন, মাদকসেবনেও হাতেখড়ি একই সঙ্গে। মাদকের ভাগবন্টন নিয়ে বিরোধ তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে। একপর্যায়ে তারা শত্রুতে পরিণত হন । বরগুনায় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর বিরুদ্ধে যেমন মাদকের কয়েকটি মামলা রয়েছে, তেমনি মাদকের একাধিক মামলার আসামি নিহত রিফাত শরীফও।
এসব তথ্য জানিয়েছেন বরগুনার মাদক ও ধূমপান বিরোধী আন্দোলনের নেতা ও মানবাধিকারকর্মী মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু। তিনি বলেন, মাদকের ভাগবন্টন নিয়ে নয়ন বন্ড আর রিফাত শরীফের বিরোধের কথা এলাকার সবাই জানে। ওই বিরোধের জের হিসেবেই একবার রিফাতকে মাদকসহ পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয় নয়ন। এ ঘটনায় কয়েকমাস জেলেও ছিল নয়ন।
বরগুনার স্থানীয় অনেকের ধারণা, প্রকাশ্যে দিবালোকে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে মিন্নিকে নিয়ে বিরোধ নয়, মাদক সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করে নয়ন বন্ড।
এর সত্যতা মিলে বরগুনা থানায় দুজনের নামে দায়ের করা মাদকের মামলা থেকে। বরগুনা থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, রিফাত শরীফ হত্যার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডের নামে আটটি ও রিফাত ফরাজীর নামে চারটি মামলা রয়েছে।
বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্য সড়কে গত ২৬ জুন শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচিত এখন। রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার সময় তা ঠেকাতে তার স্ত্রী মিন্নির চেষ্টার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে আলোচনার ঝড় বয়ে যায়। স্বামীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ মিন্নি নিজেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।
আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে নয়ন বন্ড ও রিফাত শরীফের দ্বন্দ্ব এই হত্যাকাণ্ডের কারণ বলে পুলিশ দাবি করলেও স্থানীয়রা মনে করছেন, মাদক নিয়ে বিরোধ থেকেই কুপিয়ে হত্যার এ ঘটনাটি ঘটেছে।