নাটোর প্রতিনিধি
নাটোর জেলায় মাছের মোট চাহিদা যেখানে ৩৭ হাজার ৩ ’৭৬ মেট্রিক টন সেখানে জেলায় ২০১৮-২০১৯ বছরে উৎপাদন হয়েছিল ৫০ হাজার ৯৯৭ টন। এতে উদ্বৃত্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৬২০ দশমিক ৯৬ মেট্রিক টন।
বুধবার দুপুরে মৎস্য সপ্তাহ ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
এছাড়া পানি সংকট ও সঠিক রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে চলনবিল সহ নাটোরের প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন নাটোর জেলা মৎস্য দপ্তর। তবে বদ্ধ জলাশয়ে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর নাটোর জেলায় প্রায় ১৩ হাজার ৬২০ দশমিক ৯৬ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত মাছ উৎপাদন হয়েছে বলে দাবি করেছে দপ্তরটি।
‘মৎস্য সেক্টরের সমৃদ্ধি, সুনীল অর্থনীতির অগ্রগতি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ১৭ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই সপ্তাহের কর্মসূচি। মৎস্য সপ্তাহের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মৎস্য পোনা অবমুক্তকরণ, মূল্যায়ন সভা,শ্রেষ্ঠ খামারীদের পুরষ্কার প্রদান, মৎস্য আইনের বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা,বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন এবং তিনদিনের মৎস্য মেলা।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মৎস্য অধিদপ্তর আয়োজনে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোছাঃ শরিফুন্নেসার সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক গোলাম রাব্বী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আশরাফুল ইসলাম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সহ অন্যান্যেরা।
এ মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, নাটোরে মাছের উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে। প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর আয়োজন এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে মৎস্য বিভাগের সাথে মৎস্য চাষীদের তৈরী হয়েছে মেলবন্ধন, বেড়েছে সচেতনতা, বেড়েছে উৎপাদন। শস্য ভান্ডারের মত নাটোর পরিচিতি পাচ্ছে মৎস্য ভান্ডার হিসেবেও। জেলায় মাছের মোট চাহিদা যেখানে ৩৭ হাজার ৩শ’৭৬ মেট্রিক টন সেখানে জেলায় ২০১৮-২০১৯ বছরে উৎপাদন হয়েছিল ৫০ হাজার ৯৯৭ টন। এতে উদ্বৃত্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৬২০.৯৬ মেট্রিক টন।
উদ্বৃত্ত এই মাছ যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের ঘাটতি এলাকার চাহিদা পূরণের জন্য। জেলার চার হাজার ৭২২ হেক্টর নদী এবং দুই হাজার ২৪৪ হেক্টর বিল এলাকা দেশীয় রকমারী প্রজাতির মাছের মূল উৎস। এর বাইরে সাত হাজার ৭১২ হেক্টর পুকুর-দীঘি এবং ৪২ হাজার ৪৭৪ হেক্টর প্লাবন ভুমিতে মাছ চাষ করা হচ্ছে। মতবিনিময় সভায় মৎস্য সপ্তাহের বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরা হয়।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরে তারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এসময় মৎস্য অভয়ারণ্য সংরক্ষণ সহ অতিরিক্ত মৎস্য উপাদনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।