রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় সরকারি নিযমনীতি তোযাক্কা না করে গড়ে উঠেছে কিন্ডার গার্ডেন এন্ড ক্যাডেট কেজি স্কুল। এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শত শত কচিকাচা শিক্ষার্থী পড়াশুনা করলেও এর উপর সরকারের কোন নিয়ন্ত্রন নেই। এবং শিক্ষার মানন্নোয়ন নয় ব্যবসাই মূল লক্ষ্য এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মালিকদের। অনেক প্রতিষ্ঠানে নেই শিক্ষার পরিবেশ। ছোট পরিসরে ঘাদাঘাদি করে পাঠদান, অদক্ষ ও তুলনামূলক স্বল্প শিক্ষিত শিক্ষকদারা দেন পাঠদান। তারা সরকারের পাঠ্য বইয়ের তুলনায় নিজেদের বইকে প্রাধান্য দেন এবং অতিরিক্ত বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয় কচিকাচা শিক্ষার্থীদের ওপর। এছাড়া অসহনীয় ভর্তি ফি আদায়, অতিরিক্ত মাসিক বেতন, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষার নামে মাসে মাসে পরীক্ষা ফি আদায়, শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন না করার অভিযোগ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রয়েছে। এবং প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণে সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। তবে ব্যাঙের ছাতার মত এতগুলো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় চলছে শিক্ষার্থীদের নিয়ে টানাটানি। এনিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও।
সরেজমিনে দেখাগেছে, উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভায়,ভবানীগঞ্জ পৌরসভা,মোহনগঞ্জ,শিকদারী,হামিরকুৎসা,বাইগাছা,হাটগাঙ্গোপাড়াসহ উপজেলার আনাছে –কানাচে সরকারি নিযমনীতি তোযাক্কা না করে গড়ে উঠেছে কিন্ডার গার্টেন এন্ড ক্যাডেট স্কুল। এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোর্ডের বাংলা,ইংরেজী,গণিত-এ তিনটি বিষয়ের সঙ্গে সহায়ক হিসাবে ধর্ম,পরিবেশ পরিচিতি বিজ্ঞান,ওয়ার্ড বুক,চিত্রাংকন, বাংলা ও ইংরেজী হাতের লেখা শেখার,সাধারন জ্ঞান, নামতা-গুন-ভাগ জ্যামিতি আছে এবং একটি গণিত বই,ব্যাকরণ, ইংরেজী গ্রামার,গল্প ও কবিতার এবং কম্পিউটার শিক্ষা সংক্রান্ত বই দেওয়া হয়ে থাকে। স্কুল ভেদে এসব বইয়ের সংখ্যা ও বিষয় কম বেশী হয়ে থাকে। তৃতীয় শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়,বিজ্ঞান ও ধর্ম ৬ টি সরকারী বইয়ের সঙ্গে সহায়ক হিসাবে দেয়া হয় ব্যাকরণ, ইংরেজী গ্রামার ,কম্পিউটার, চিত্রাংকন, দ্রুত পঠন ধরণের দুই থেকে ছয়টি বই।
এছাড়া স্কুল থেকে ওই শিক্ষকদের কোচিং প্রইভেটে যাওয়ার জন্য অনেক শিশুকে ব্যাগে তুলে নিতে হয় সে সব বই।আর এসব শিক্ষা বানিজ্য করে লাভবান হচ্ছে প্রি-ক্যাডেট কিন্ডার গার্ডেন পরিচালক বা মালিকগন। এগুলো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় চলছে শিক্ষার্থীদের নিয়ে টানাটানি। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে কোচিং বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এমনকি ক্লাস শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ফেল করার আশঙ্কা রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীরা বিষয় ভিত্তিক প্রতি মাসে শত শত টাকা দিয়ে কোচিংয়ে পড়াতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাথমিক স্কুলের শিশুদের শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ভারি স্কুলব্যাগ নিষেধ। কিন্তু কোন স্কুলে মানা হচ্ছেনা এ আইন। অভিভাবকেরা জানান কেজি স্কুেলর শিক্ষকের ভয়ে শিক্ষার্থীরা অনুমোদিত বইয়ের বাইরে বাড়তি বই নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। পরিপত্রে বলা হয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য যে সব বই অনুমোদিত করেছে তা বহনে সমস্যা হবার কথা না। পরিপত্রে ও আদালতের নির্দেশনার কথা উলে¬খ করে বলা হয়েছে নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদিত বই বহন করলে শিশুদের ঘাড়ে ব্যাথা বা অন্য সমস্যা হবেনা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ব্যাগে গাইড বই থেকে শুরু যাবতীয় জিনিস পত্র থাকার কারনে ১০ শতাংশের চেয়ে কয়েক গুন বেশি ওজনসহ ব্যাগ বহন করতে হচ্ছে। এবিষয়ে যোগাযাগ করা হলে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম জানান, বাগমারা উপজেলায় গড়ে উঠা যেসকল কিন্ডার গার্ডেন এন্ড ক্যাডেট কেজি স্কুল রয়েছে তাদের মধ্যে সরকারী অনুমোদন আছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে অনুমোদন না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে অচিরে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।