ঈশ্বরদীতে ভাষা শহীদ স্কুলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

ঈশ্বরদীর ভাষা শহীদ বিদ্যা নিকেতনের স্কুল শিক্ষক কর্তৃক নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি এবং প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বিরুদ্ধে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ওই স্কুল ছাত্রী , ছাত্রীর বাবা এবং শিক্ষকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা যায়, গত ১১ জুলাই সকালে ওই ছাত্রী জয়নগর ওয়াবদা গেটের সামনে ওই স্কুলের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায়। তখনও আর কোন শিক্ষার্থী না আসায় সিরাজ মাষ্টার একা পেয়ে ওই ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে শ্লীলতাহানি করতে থাকে। এসময় ছাত্রীর কান্নায় ওই শিক্ষকের স্ত্রী প্রাইভেট পড়ানোর কক্ষে চলে আসলে তখন সিরাজ ঘর হতে বের হযে যায়। ছাত্রী জানায়, শিক্ষকের স্ত্রী উল্টো তাকেই বকাঝকা করে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের জনৈক শিক্ষক জানান, ওই ছাত্রী প্রাইভেট শিক্ষকের বাড়ি হতে সরাসরি স্কুলে আসে। স্কুলের এসেম্বেলিতে দাঁড়িয়ে সে সর্বক্ষণ অঝোর ধারায় কেঁদেই যাচ্ছিল। পরে বান্ধবীদের কাছে প্রকৃত বিষয়টি প্রকাশ করলে ঘটনা ছড়িযে পড়ে। তিনি আরো জানান, গত ১৩ জুলাই শনিবার এঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছিল। শিক্ষার্থিরা বিক্ষোভ করে মানববন্ধনের জন্য বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে প্রধান শিক্ষক অন্যান্য শিক্ষকদের দিয়ে কাউকে ক্লাস থেকে বের হতে দেননি।
ওই ছাত্রীর সাথে কথা বললে সে ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমার নিকট হতে একটি লিখিত আবেদন নিয়েছেন ।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবার সাথে শনিবার রাতে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট গেলে প্রধান শিক্ষক বলেন, সামাজিক কিছু বিষয রয়েছে। মেয়ের বিয়ে দিতে হবে। তাই বেশী হইচই করার দরকার নাই। আমিই ব্যবস্থা নিব। তিনি বলেন, শিক্ষক দ্বারা যে এমন ঘটনা ঘটবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।


এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বলেন, এমন কিছুই হয়নি। সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমরা বিষযটা ঠিক করে নেব। দ্বিতীয় দফায় ছাত্রী ও তার বাবার সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানালে তখন প্রধান শিক্ষক আবেদন নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সিরাজ এই স্কুলের খন্ডকালীন শিক্ষক । আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করব।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হেডমাষ্টার আমাকে কিছুই জানাননি। পরে খোঁজ নিয়ে তিনি আবার বলেন, রবিবার আমি ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ওই শিক্ষককে বরখাস্তের ব্যবস্থা করব। ছাত্রীকে দিযে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামল্ওা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এব্যাপারে ওই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন প্রধান শিক্ষক কর্তৃক এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার প্রচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, দ্রুত ওই শিক্ষককে বরখাস্ত এবং আইনের হাতে সোপর্দ করা উচিত।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সভাপতি জোমসেদ আলী ন্যাক্কারজনক এই ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।